ফি দিতে না পারায় শিক্ষকের বকা, স্কুলেই আত্মহত্যা করলেন তন্ময়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩২ PM , আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:০৯ PM
পটুয়াখালীতে শিক্ষকের বকাঝকা ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দশমিনা উপজেলার আরোজবেগী এস এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিক্ষার্থীর তন্ময় চক্রবর্তী (১৫)। সে ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। তন্ময় ওই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আরোজবেগী এস এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলের কক্ষ পরিদর্শক মরিয়ম বেগম তন্ময়কে ডেকে বলেন, 'তোমার টাকা বকেয়া আছে। তুমি পরীক্ষা দিতে পারবে না। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে অনুমতি নিয়ে আস।' তন্ময় প্রধান শিক্ষক কাওসার হোসেনের সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, 'টাকা ছাড়া তোমার পরীক্ষা দেয়া হবে না।'
পরে তন্ময় তার মায়ের কাছে গিয়ে টাকা চাইলেও টাকা না পেয়ে বিদ্যালয়ে ফিরে আসে এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে আবারও পরীক্ষায় বসার অনুমতি চাইলে প্রধান শিক্ষক তন্ময়ের সহপাঠীদের সামনে তাকে নেশাখোর বলে চড়থাপ্পর দেন।
এই ঘটনায় অভিমান করে তন্ময় বিদ্যালয় ভবনে বসে অনেকগুলো গ্যাসের ওষুধ খায়। ওষুধের প্রতিক্রিয়া শুরু হলে সে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যায় এবং সেখানে গিয়ে বমি করে শিক্ষকের টেবিলের উপর পড়ে যায়। তখন তন্ময়কে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা মিলে দশমিনা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার তন্ময়কে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী জেরারেল হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় বিকেল ৫ টায় তন্ময়ের মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তন্ময়ের এক সহপাঠী জানান, মৃত তন্ময়ের সহপাঠী রিফাত বলে, তন্ময়, আমি ও আরও করেকজনকে মরিয়ম ম্যাডাম প্রধান শিক্ষকের কাছে পাঠান। স্যার তখন তন্ময়ের সঙ্গে অনেক রাগারাগি করে। আর আমাদের অনুমতি দেয়ায় আমারা পরীক্ষার হলে চলে যাই। পারে শুনি তন্ময় গ্যাসের ট্যাবলেট খাইছে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
তন্ময়ের মা অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক টাকা না দিলে পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে আমার ছেলেকে স্কুল থেকে চলে যেতে বলে। আমার ছেলেকে অপমান করায় সে আত্মহত্যা করেছে।
টাকা বকেয়া থাকায় পরীক্ষা দিতে অনুমতি না দেয়া এবং চড়থাপ্পর দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক কাওসার বলেন, স্কুলে আসার পর তন্ময় অসুস্থ হয়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পটুয়াখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, সোমবার রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল থেকে আনা হয়েছে। এখনো মরদেহ মর্গে রয়েছে। একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।