৯২ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৩, ০৩:০৯ PM , আপডেট: ৩০ মে ২০২৩, ০৩:০৯ PM
সুন্দরবনের বন্য প্রাণী এবং নদী–খালের মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় আগামী ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার। এ সময় পর্যটক প্রবেশ ও সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকার তার রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবন ও এতে বিচরণকারী প্রাণী ও বিভিন্ন খালের মাছ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য আগামী তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক ও জেলেদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
বন বিভাগ ও মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখন সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন মৌসুম। বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে। তাই সব ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
এছাড়া বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এখন তাদের প্রজনন মৌসুম চলছে। এসব প্রাণীর মধ্যে রয়েছে বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোঁদড়, বন বিড়াল ও মেছো বাঘসহ অন্যান্য প্রাণী।
সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, নিল কমল, দুবলা, আলোর কোল, হিরণ পয়েন্ট, টাইগার পয়েন্ট ও কলাগাছিয়াসহ ১১টি স্পটে বন্ধ হচ্ছে পর্যটক প্রবেশ।
এদিকে নিষেধাজ্ঞাকে সামনে রেখে গহীন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরতে শুরু করেছে উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবী হিসেবে পরিচিত জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা। তবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ৯২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। বনজীবীরা বলছেন, বন্ধের দিনগুলোতে তাদের জন্য সরকারি যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তাদের।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কয়রার এক হাজারের বেশি বনজীবী নৌকা নিয়ে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন বনজীবীদের সংগঠন সুন্দরবন অঞ্চল সহব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াসাদ আলী। তিনি বলেন, অন্য জেলে নৌকাগুলোও কাল বুধবার বিকেলের মধ্যে ফিরে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধ। জেলে, বাওয়ালি, পর্যটক কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমন অবস্থায় জেলে, বাওয়ালি, পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানান তিনি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়রার বানিয়াখালী, কাশিয়াবাদ ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনসহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৩ হাজার ৫২৬ জন। নিষেধাজ্ঞার সময় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এসব জেলেদের ৩ মাসে ৮৬ কেজি চাল দেওয়া হয়।