স্বাগত মাহে রমজান

স্বাগত মাহে রমজান
স্বাগত মাহে রমজান  © সংগৃহীত

স্বাগত মাহে রমজান। বছর ঘুরে আবারও এসেছে পবিত্র রমজান মাস। রমজানের পুরো মাসে রোজা রাখা ফরজ। রমজান মাস মুমিনের জন্য আনন্দের মাস, গুনাহ মাফের মাস। এ মাসেই নাজিল হয়েছে মহাগ্রন্থ আল-কোরআন।

ইসলামের মূল পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হলো রমজান মাসে সিয়াম পালন। অবারিত রহমত, বরকত ও অফুরান কল্যাণ-সৌভাগ্যের বার্তা নিয়ে পুণ্য বৈভবে এলো মাহে রমজান। রমজান ত্যাগ ও সংযমের মাস। সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মাস রমজান। অমূল্য রতন তাকওয়া অর্জনের মাস এবং আল্লাহপ্রেমে পরিপূর্ণ নিমজ্জিত হওয়ার মাস। উম্মতে মুহাম্মদির জন্য অপরিসীম প্রতিদান লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত ও নেক আমলের মৌসুম রমজান মাস।

রোজার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে আল্লাহতাআলা কোরআনে সুরা বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’

মাহে রমজানের ৩০ দিন তিনটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম ১০ দিন রহমত, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের সময়। রমজান মাসে আল্লাহ ঈমানদারদের জন্য অশেষ রহমত ও করুণা লাভের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেন। অতীতের সব গুনাহ মাফ পাওয়ার সুযোগ আসে রমজান মাসে। মহানবী (সা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহকারে ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে এবং এমনিভাবে রাতে ইবাদত করে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি)

আরও পড়ুন: ১৫ রমজান পর্যন্ত চলবে প্রাথমিকের ক্লাস, শুরু সকাল ৯টায়।

রমজান হচ্ছে সংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ তথা তাকওয়ার মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতিও; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা–২ বাকারা, আয়াত: ১৮৩)

তাকওয়া অর্থ আল্লাহর ভয়। আল্লাহর ভয়ে সব মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা। সংযম অবলম্বন করা। এ সংযম সব শ্রেণির মানুষের জন্য। ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা অতি মুনাফার লোভ সংযত করবেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবেন। ভোক্তা ও ক্রেতারা অহেতুক অধিক পরিমাণে পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকবেন। সরকার, প্রশাসন শুধু রাজস্ব বাড়ানোর পরিবর্তে জনকল্যাণে ব্রতী হবে। তবেই পবিত্র রমজানের উদ্দেশ্য সফল হবে। রহমতের অফুরন্ত ধারা প্রবাহিত হবে। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভ হবে।

রমজানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ধনীদের মধ্যে দরিদ্র মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করানো। ধনীরা যেন বুঝতে পারে দারিদ্র মানুষের না খেয়ে থাকার পীড়া। তাই পবিত্র রমজানকে ভোজের আয়োজনে পরিণত করা উচিত নয়। পানাহারের প্রতি বেশি মনোযোগী হওয়ার চাইতে ইবাদতে মনোযোগী হওয়া উচিত। সামর্থ্যবানেরা এত বেশি পরিমাণে বাজার করা উচিত নয়, যাতে গরিব মানুষ কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এসব রমজানের শিক্ষা ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।


সর্বশেষ সংবাদ