আর কোনো মেয়েকে যেন মেঘলার মত মরতে না হয়
মেঘলা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তার স্বামী শারীরিক নির্যাতন করছে বিয়ের পর থেকেই। এক সময় নির্যাতন করতে করতে লোকটি বিয়ের ছ’মসের মধ্যেই মেঘলাকে মেরেই ফেলেছে। মেঘলা এখন মৃত। অত্যাচারীর বাড়ি থেকে মেঘলা পালায়নি কেন? আর দশটা মেয়ের মতোই হয়তো ভেবেছে, পালিয়ে যাবো কোথায়! তাই অসহায়ের মতো অত্যাচার সহ্য করেছে।
পড়ুন: প্রবাসী স্বামী ফেরার ৫ দিনের মাথায় লাশ হলেন ঢাবি ছাত্রী
বাপ মায়ের কথা আর কী বলবো। তারা তো অপদার্থ কম নয়। নির্যাতিত হচ্ছে মেয়ে, জানার পরও মানিয়ে নে, সহ্য কর বলতে থাকে। ক’জন বাবা মা মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং নির্যাতককে তালাক দেওয়ার পরামর্শ দেয়! মেয়ের কথা তারা ভাবে না, ভাবে লোকের কথা। লোকে কী বলবে!
প্রতিটি দেশেই নির্যাতিত মেয়েদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত। কোনও মেয়ে নির্যাতিত হওয়ার শুরুতেই যেন সেখানে আশ্রয় নেয়। সেখানে বিনেপয়সায় তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে, খাওয়া পরা আলোচনা পরামর্শ ইত্যাদি দেওয়া হবে। ডাক্তার, মনোবিদ দেওয়া হবে, যে কাজে তারা পারদর্শী সে কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অতঃপর স্বনির্ভর হওয়ার জন্য সব রকম সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে।
পড়ুন: স্বামীর সঙ্গে ঝামেলা চলছিল মেঘলার, বাধ্য করতেন ভিডিও কলে থাকতে
ধনীরা যেন অর্থহীন কাজে টাকা না ঢেলে নির্যাতিত মেয়েদের আশ্রয়কেন্দ্রে টাকা ঢালেন। সরকার থেকেও যেন সব রকম সাহায্য করা হয়। সেইসব আশ্রয়কেন্দ্রের যেন চব্বিশ ঘণ্টা ফোন খোলা থাকে, যে কোনও মেয়েই বিপদে পড়ে যেন ফোন করতে পারে। রেডিও টেলিভিশনে পত্র পত্রিকায় যেন এর বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।
পড়ুন: ইলমা আবেগী ছিল, সে আত্মহত্যা করেছে: দাবি স্বামীর
যে মেয়ে বিপদে পড়েছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, আশ্রয়কেন্দ্রের রেসকিউ বাহিনী যেন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে। বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্কর নারীবিদ্বেষী দেশ। এ দেশে তো শত শত আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত। মেয়েরা রাস্তা ঘাটে, অফিসে বাজারে, বাড়িতে গাড়িতে, দিনে রাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর যেন কোনও মেয়েকে মেঘলার মতো মরতে না হয়।