শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মত পরিস্থিতি কখনো আসবে না!

হেলাল খান
হেলাল খান  © টিডিসি ফটো

করোনা জ্বর-ঠান্ডা, সর্দি-কাশির মতো সমস্যাগুলো পৃথিবীতে থেকে যাবে। বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদি পায়ও তা ১৬/১৮ কোটি মানুষের চাহিদা সম্পূর্ণরুপে মেটাতে কয় বছর সময় লাগবে তাও অনিশ্চিত।

কারণ আমরা এক্ষেত্রে অনেকটা ভিক্ষুকের মতো। মালিক তার নিজের চাহিটা মিটিয়ে যদি মন চায় দয়া করে আমাদের ভ্যাকসিন দেবে তাও সবার চাহিদা মিটবে কি না সংশয় থেকেই যাবে।

সেই হিসেবে বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মত পরিস্থিতি হয়ত কখনো বা কোনদিন সৃষ্টি হবে বলে মনে হয় না। এজন্য ২০দিন, ১ মাস করে ছুটি গত ১ বছর হল বাড়িয়ে যাচ্ছেন সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কর্মরত উর্ধতন কর্মকর্তারা।

এবার আসি আসল কথায়। করোনা শুরুর প্রথম ৪/৫ মাস পর থেকেই আমরা দেখেছি গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে ১০-৫০ হাজার লোক সমাগম করে মিছিল-মিটিং করা হচ্ছে।

বাণিজ্যিক সকল প্রতিষ্ঠান, বড় বড় শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, সিনেমা হলগুলোও খুলে দেয়া হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে। দেশের ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলায়, ৪৪৪৮টি ইউনিয়ন, ৬৪৭ থানা, ৪৯২ উপজেলা, ৬৪ জেলাতে গত ১ বছর আগের পরিস্থিতি ফিরে এসেছি বলে আমি মনে করি।

মানুষের মাঝে আর করোনাভীতি কাজ করে না। হয়ত এজন্যই গ্রাম থেকে শহরে মানুষ ছুটে চলছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এ সকল নির্বাচনী প্রচারণায় হাজারো পরিবারের লাখ লাখ মানুষ এক সাথে একত্রিত হচ্ছে।

পড়ুন: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১ম ২য় ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের কথা ভুলে গেছে

চাকরির বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে। তরুণ চাকরিপ্রর্থীরা গ্রাম থেকে শহরে ছুটে চলছে কোন সমস্যা হচ্ছে না। মানুষ অবাধে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে সকল কাজই দেখছি করে চলেছে। করোনা তাদের ছুবে না বা ছোঁয়ার যোগ্যতা রাখে না!

করোনায় মৃত্যুর হার যখন ২০% ছিল তখনও পরিস্থিতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুকূলে ছিল না। আবার এখন যখন পরিস্থিতি ৫% তখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে না বা হয়ত কোনদিন হবেও না।

শিক্ষার্থীরা যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিপক্ষে- আপনাদেরকে একটা প্রশ্ন করতে চাই- জন্ম, মৃত্যুর ওপর মানুষের হাত নেই; তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এটা সত্য।

পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে: নুর

পৃথিবীর সকল দেশ, যদি বাংলাদেশের সকল সেক্টর স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক রুপে ফিরে আসতে পারে আপনি/আপনার যথেষ্ট বুদ্ধিমান/বুদ্ধিমতী আপনারা কেন পারবেন না স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিকূল এই পরিস্থিতির বিপক্ষে লড়াই করে জীবন সংগ্রামের বাকিটা পথ চলতে? আপনি/আপনারা করোনার দোহায় দিয়ে ঘরে বসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই কি অমরত্ব লাভ করে ফেলবেন?

মৃত্যু সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের কিছু কথা- ‘‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের পাকড়াও করবেই; যদিও তোমরা সুদূঢ় দূর্গের ভিতরে অবস্থান করো তবুও।’’ (সূরা নিসা, আয়াত:৭৮)

‘‘নিশ্চয়ই তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে’’। (সূরা যুমার, আয়াত: ৩০)

‘‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তোমাদের মৃত্যু এসে যাবে, এক মুহূর্ত বিলম্বিত বা ত্বরান্বিত করতে পারবে না’’। (সূরা নাহল, আয়াত: ৬১)

আসুন সবাই এক হই এই বন্ধী জীবন আর ভালোলাগছে না। ফেব্রুয়ারীর প্রথমেই যে কোন দিন আপনাদের সকলের মতামতের ভিত্তিতে অতিদ্রুত সময়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হাতে নিতে চাই। প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসেই এক যোগে এই কর্মসূচি পালন করতে চাই।

কয়দিন পরে বিস্তারিত এ বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে ও কর্মসূচি সফল করতে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি লাগবে। যারা দায়িত্বশীলভাবে কাজগুলো বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র সকলকে সাথে নিয়ে পালন করবে। এমন কাজে আগ্রহী ভাই ও বোনদের নিয়ে পরবর্তী পোস্টে একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হবে। তারা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে আন্দোলন সফল করতে আগ্রহী।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ