দুই টাকার বাদাম আর তিন টাকার শিঙাড়ায় তোমার হবে না!
- সাজেদুল হক
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৩২ PM , আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৫৩ PM
আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো প্রেম। যাকে আমি ‘মহামারী’ বলেই ডাকি। শিউলি ফুল কিংবা জোছনা রাতে শহুরের ল্যাম্পপোস্ট খচিত নিয়ন আলোর মিছিলে অনেক সময় আমরা এক একজন উন্মাদিনী হয়ে উঠেনি। এসময় যার সাক্ষাত বিভ্রান্তিতে রঙিন গলির মোড়ে বুক ভর্তি মায়ার সারনির্যাস নিয়ে আমি হাজির হবো।
কে সে মহামানবী? অভিমানিনী কিংবা এলোকেশের মায়াবতী। নিরবচ্ছিন্ন এই রাত কেটে যায়, বিভোর সন্ধ্যায় উপেক্ষার খেঁকশিয়াল কুহক দিয়ে ঘরপালানোর ইশারা দেয়।
নাহ, এলিট শ্রেণীর মহামানবী তুমি। তোমার ঘুম ভাঙেনি এখনো, মুয়াজ্জিন মিনার ঘেঁষে ফজর আজান দিয়ে সুরভিত কণ্ঠে তোমাদের আহবান করে যায়। শাশ্বত সৌন্দর্য এবং সৎ পথের দিকে, যেন তোমরা একীভূত হতে পারো, সাম্যবাদীতায়। যেন উপক্ষার তীব্র যন্ত্রণা থেকে তোমরা নিজেদের সরিয়ে, আপন নিবাসে পথ চলতে পারো। স্বকীয়তায় আধিপত্য বিস্তারে নির্ভীক সহযোগী হতে পারো নিঃসংকোচে।
এসবে যেন পাল্টে না যায়, তোমার বিনয়ীতার নম্র সুর, ভাস্কর্যের মাধুর্য। পঙক্তিতে-পঙক্তিতে তোমার রচনা যেন হয়ে উঠে নৈশব্দের পরিচিত রিংটোন। পুরনো দেয়ালটা দেখলেই যেন মনে উঠে, পকেটে খুচরো স্বপ্ন উঁকি না দেয়া ছেলেটির আত্মচিৎকার।
দুই টাকার ভাংতি নোটের বিনিময়ে সে তোমাকে কখনো নামি-দামি রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়নি, যেতে পারবেও না। কারণ সে যে এক ছিটেফোঁটা মধ্যবিত্ত।
ছেলেটির দুঃখবোধ; অনুভূতির ডায়েরীর পাতায় সযত্নে রেখে আসা জমানো কিংবা তরতাজা জামা থেকে আসা কর্পোরেট পারফিউমের ঘ্রাণের সঙ্গ। সেই ঘ্রাণ মাখানোর নামে জুড়ে থাকে শুকনো গোলাপের পাপড়িতে। শিউলি ফুলের মালা আর মন ফড়িংয়ের ডানা।
তবুও তুমি আহ্লাদী হওনি, সে জানে এ সম্ভব না! তুমি যে উচ্চবিত্তের আলালের ঘরের দুলালী। দুটাকার খুচরো বাদাম আর তিনটাকার গরম গরম শিঙাড়ায় তোমার হবেনা। পিৎজা হাটের পিৎজা দিয়ে দৈনিক নৈশভোজ করানোর সে সামর্থ্য তার নেই। একজন প্রেমিকের কাছে তোমার ঐ ছয় সেকেন্ডের মৃদু হাসিটাই প্রিয়। প্রতিদিন ঘুমে স্বপ্নের নায়িকাতেই তুমি তার পূর্ণিমা নীল দ্বাদশী।
কাপুরুষতাকে পিছনে ফেলে, বীরপুরুষের চরিত্র ধারণ করে সম্মুখ এগোবার প্রত্যয় নিয়েছে সে এবার। শঙ্খচিলের গানে তুমি শুনে যাও বাতাসে শরতের গন্ধ আসে। এই যে ভোর, অপরাহ্ন, গোধূলির শান্ত বিকেলেও সে তোমাকে ভালোবাসে।
উৎসর্গঃ মহামারী আক্রান্ত মানুষের দল।
লেখক শিক্ষার্থী: ঢাকা কলেজ, সামাজবিজ্ঞান বিভাগ