‘অন্য দেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়া যায় না’
- সুমন সুবহান
- প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ PM , আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ PM
গ্লোবাল ভিলেজে (বিশ্বগ্রামে) আমাদের বসবাস। বর্তমান যুগে একটা দেশের সাথে আরেকটা দেশের সম্পর্ক শুধু সরকারি পর্যায়ে না, দুই দেশের জনগণের মাঝেও একটা সমান্তরাল সম্পর্ক থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সমান্তরাল এই সম্পর্কটা যেন আরও একটু গাঢ়। ১৯৭১ সালের পর থেকে ভারতে এপর্যন্ত যতগুলো সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাদের মধ্যে প্রকৃত সৎ প্রতিবেশীসুলভ পররাষ্ট্রনীতি ছিল প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেসাইয়ের, জনতা পার্টির সরকারের সময়ে—২৪ মার্চ ১৯৭৭ থেকে ২৮ জুলাই ১৯৭৯ সালে।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর নানারকম খুচরা সমস্যার পিছনে যে সংস্থার নাম বারবার উচ্চারিত হয় সেটি হলো তাদের গোয়েন্দা সংস্থা, ‘র’। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ‘র’ এর বাজেট কাটছাঁট করেছিলেন। শুধুমাত্র তার সময়ই সম্ভবত একদেশের সাথে আরেক দেশের সরকার এবং জনগণ পর্যায়ে সম্পর্কটা ভালো ছিল।
প্রতিটা দেশের সরকারই তাদের ভোটারদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, নিজ দেশের স্বার্থ তারা যে কোন উপায়েই হোক না কেন সেটা আদায়ের চেষ্টা করে থাকেন। এটা করতে গিয়ে কোন কোন সরকার হয়তো মানবিক, স্পর্শকাতর ভূ-রাজনৈতিক বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রাখেন, আবার কোন কোন সরকার ভীষণ রকমের আগ্রাসী এবং একরোখা, যেমন নরেন্দ্র মোদী সরকার।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ আমাদের কাছে ছিল স্বাধীনতা অর্জনের, কিন্তু ভারতের কাছে সেটা ছিল পাকিস্তানকে ভাগ করার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। ন্যারেটিভে ভিন্নতা থাকলেও অভিন্ন স্বার্থ সেদিন আমাদের এক করেছিল—কিন্তু স্বাধীনতার পর এই দু’টা দেশ যার যার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে এগিয়ে গেছে। আমরা যদি তিস্তা পানিচুক্তির মতো স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ভারতের কাছ থেকে ঠিকঠাক আদায় করতে না পারি তবে সেটা আমাদের ব্যর্থতা, এজন্য ভারতকে দোষারোপ করে লাভ নেই।
এসব বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ইফেক্টিভ না হলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম বা ফোরাম বা আদালত রয়েছে। আর সেসব ফোরামে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হলে নিজেদের সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো জোরদার ও শক্তিশালী করা প্রয়োজন, নিজেদের তৈরি করে সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তির প্লেসমেন্ট প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সঠিক উদাহরণ হতে পারে কিউবা, আমেরিকার নাকের ডগায় একটা স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক দেশ টিকে আছে মূলত শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কারণে।
সরকার যখন ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে তখন তার নৈতিকতার জোর থাকে না, এবং তখনই সেই সরকারের দেশের জনগণ না, আন্তর্জাতিক মুরুব্বীর দরকার হয়। একটা দেশ এভাবেই আরেকটা দেশকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ তৈরি করে দেয়। যেভাবে শেখ হাসিনা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন মোদীর সরকারকে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফল থেকে অর্জিত ম্যান্ডেট বা নৈতিক ক্ষমতার জোরেই শেখ মুজিব ১৯৭২ সালের ১২ মার্চ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হন। আবার তিনিই ১৯৭৩ সালে ভোটচুরি করে ক্ষমতা ধরে রাখায় তার নৈতিক পরাজয় ঘটে, যার ফলাফল নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড। মাফিয়া রাণী শেখ হাসিনার কথা যদি বলি, ১৯৯৬ সালে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তিনি দেশের জন্য কিছু মঙ্গলকর উদ্যোগ নিতে পেরেছিলেন, যেমন ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তি। অথচ এই চুক্তি ভারত সরকারের সহায়তা ছাড়া সম্ভব ছিল না, কারণ শান্তিবাহিনী ভারত সরকারের কাছ থেকে আশ্রয়, প্রশ্রয় এবং সামরিক সহযোগিতা পেত।
২০২৪ সালের আমি-ডামি-স্বামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের শাসন ক্ষমতা ধরে রেখে এই ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী কানেক্টিভিটির নামে ভারতের সাথে বিতর্কিত রেল করিডোর বা ট্রানজিট চুক্তি করেছিলেন। কারণ নৈতিক কারণে তার দায়বদ্ধতা দেশের জনগণ না, ভারতের সরকারের কাছে ছিল। এজন্য আমরা কাকে দায়ী করবো? ভারতের সরকার? ভারতের জনগণ? নাকি এদেশের সরকারকে? অথবা এদেশের জনগণকে, যারা বারংবার আন্দোলন করেও তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
২.
ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বরাবরই আগ্রাসী এবং একারণে সার্কের মতো একটা রিজিওনাল প্ল্যাটফর্ম বর্তমানে অকার্যকর অবস্থায় আছে। বর্তমানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মাঝে ভুটান ছাড়া আর কারও সাথেই ভারত সরকারের সুসম্পর্ক নেই। সুসম্পর্ক বলতে সরকার পর্যায়ের সম্পর্কের কথা বলছি। এসব দেশের জনগণের সাথে জনগণের যে সম্পর্ক তা কিন্তু বহমান, এমনকি কিছুক্ষেত্রে পাকিস্তানের সাথেও।
এইমুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের সাথে এদেশের জনগণের সম্পর্ক যে অবস্থায় দাঁড়াতে যাচ্ছে বা দাঁড়িয়েছে তাতে পাকিস্তানের সাথে তাদের সম্পর্ক এরচেয়েও ভালো বলে আমার ধারণা। একদেশের জনগণের সাথে আরেকদেশের জনগণের মাঝে সুসম্পর্ক অনেকসময় দেশের সরকার ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের দেশে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল তখন পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ আমাদের ছাত্র- জনতার পক্ষে বক্তৃতা- বিবৃতি দিয়েছেন, রাজপথে মিছিল করেছেন।
জনগণের এই মনোভাব বুঝতে পেরে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আন্দোলনের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে সীমান্ত খুলে দেয়ার কথাও বলেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের জনগণের এই ভালোবাসা আমরা ৭১ সালেও প্রত্যক্ষ করেছি, প্রায় এক কোটি মানুষ তখন পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ত্রিপুরায় অসংখ্য মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প, ফিল্ড হাসপাতাল এবং শরনার্থী শিবির ছিল।
কিছুদিন ধরে ভারতের জাতীয় পতাকা অবমাননাকে কেন্দ্র করে যেসব উচ্ছৃখল ঘটনা ঘটছে তার ফলাফলটা কি দাঁড়াচ্ছে? কলকাতার হাইকমিশন অফিসে ভাঙচুর, প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ, আগরতলায় হাইকমিশন অফিসে ভাঙচুর, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা। যে মমতা ব্যানার্জী তিন মাস আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে বিবৃতি দিলেন তিনি এখন নরেন্দ্রমোদী সরকারকে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।
বুয়েটের মেধাবী ভাইয়েরা যদি আজকের এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য ভারতীয় পতাকার অবমাননা করে থাকেন, তাহলে বলবো তারা সফল। তারা যদি বর্তমান সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবার জন্য এই কাজটা করে থাকেন তাহলেও তারা সফল। কিন্তু তারা কি জানেন এরইমধ্যে আইআইটি বোম্বে ‘Techfest IIT Bombay 2024’ থেকে ডুয়েটের রবোটিক্স টিমকে বাদ দিয়েছে, এটা এশিয়ার সবচেয়ে বড় ‘সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফেস্টিভাল’ সামনে এরকম আরও কিছু পদক্ষেপ আসতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে আমাদের মেধাবী স্টুডেন্টরা।
প্রশ্ন হলো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কেন তার অবস্থান পাল্টালেন? কারণ পশ্চিমবঙ্গের ভোটের রাজনীতি, কারণ তিনি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের এইমুহুর্তের অনুভূতি পড়তে পেড়েছেন। যারা ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী কিংবা কলকাতার রিপাবলিক বাংলা চ্যানেলের সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষকে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের অনুভূতিকে সংজ্ঞায়িত করতে চান তারা ভুল পথে হাঁটছেন। দয়া করে কবির সুমনের লেখা পড়ুন। শ্রীজাত কবি হিসেবে ভালো হলেও ইতিহাস জ্ঞানে দুর্বল তাই তাকে নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো। আমার সাথেও পশ্চিমবঙ্গের কারো কারো সাথে যোগাযোগ হয়। তারাও দুই বাংলার কিছু উম্মাদের পতাকা উম্মাদনার কারণে বিরক্ত।
৩.
আমি যেটা জানি এবং বুঝি, এদেশের জনগণের ক্ষোভ এবং রাগ ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে না। তাদের সমস্ত ক্ষোভ মূলত ভারত সরকারের পররাষ্ট্র নীতির বিরুদ্ধে। রাগ মূলত পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়া এবং কিছু ইউটিউবারের বিরুদ্ধে। তাহলে ভাই রাগটা সেখানেই ঝাড়ুন না! শুধুশুধু সস্তা আবেগ দেখিয়ে ভারতের সাধারণ জনগণের অনুভূতির বিরুদ্ধে না গিয়ে ধ্রুব রাঠি’র মতো ইংরেজিতে কন্টেন্ট তৈরি করুন, কাউন্টার ন্যারেটিভ দাঁড় করান। ভারতের জনগণকে বোঝান তাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতে প্রতিবেশী দেশের জনগণ কীভাবে নিষ্পেষিত হচ্ছে। এছাড়া ভারত সরকারের বিরুদ্ধে কীভাবে কাজ করতে হবে তার একটা রাস্তা তো পিনাকী দা দেখিয়ে দিয়েছেন। তাদের এফএমসিজি বয়কট করুন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বন্ধ করুন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মেডিকেল ভিসা নিয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৬৭ জন, যেটা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়েছে প্রায় ৪৭.৯%। ওই অর্থবছরে মেডিকেল ভিসা নিয়েছেন ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫৭০ জন। ভারতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক বাংলাদেশের, তাই ভারত সরকারকে চাপে রাখতে পর্যটনে যাওয়া বন্ধ করুন। ২০২২ সালে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক গিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৭ জন, বাংলাদেশে থেকে গিয়েছিলেন ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬০ জন আর যুক্তরাজ্য থেকে গিয়েছিলেন ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৮ জন।
প্রতিবছরই ভারতে বাংলাদেশী পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২২ সালে পর্যটকদের কাছ থেকে ভারতের আয় হয়েছে ১৬.৯৩ বিলিয়ন বা ১,৬৯৩ কোটি ডলার, এর একটা বড় অংশ তারা আয় করেছে বাংলাদেশ থেকে। ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া বন্ধ করুন। অর্থনৈতিক চাপটা ভারত সরকারকে টের পেতে দিন। বয়কটের কারণে পশ্চিমবঙ্গের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে তার দায়ভার মমতা ব্যানার্জীর পাশাপাশি শুভেন্দুর দলের ওপরেও বর্তাবে। কোভিডের সময়ে আমরা কলকাতার হোটেল- রেস্টুরেন্ট- মার্কেট-ক্লিনিকের অবস্থা দেখেছি।
কিন্তু আপনি তো তা করবেন না। আপনি হিন্দি গান গাইবেন, হিন্দি সিনেমা দেখবেন, হিন্দি টিভি চ্যানেল দেখবেন, ভারতের পোষাক-শাড়ি পরবেন, ভারতের আলু-পিঁয়াজ খাবেন আর মুখে সস্তা দেশপ্রেমের বুলি কপচাবেন। আপনার এত দেশপ্রেম থাকলে তারেক রহমানকে একা একা কেন হ্যান্ডমাইক হাতে ভারতীয় পণ্য বিরোধী ক্যাম্পেইন চালাতে হয়।
আবালের মতো আরেকটা দেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়া যায় না। এ যেন মাফিয়া সর্দার হাসিনার মতো, এই সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটা ষড়যন্ত্র। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের সরকার আমাদের সরকার, তাই দেশপ্রেমের নামে আবালের মতো আরেক দেশের পতাকা পুড়িয়ে সেদেশের জনগণের মনে ক্ষোভ উস্কে দেয়ার মত গর্হিত কাজকে সমর্থন করতে পারিনা।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতের মাটিতে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইসকন সহ আরও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমনিতেই বেশ নাজুক। এরকম অবস্থায় নতুন আরেকটা ইস্যু এনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা শুভ বুদ্ধির পরিচয় বহন করেনা। তাছাড়া হিংসা শুধু হিংসাই সৃষ্টি করতে পারে। আমেরিকা-ব্রাজিলের জনগণ জাতীয় পতাকার ডিজাইনে ব্রা- প্যান্টি- জুতা- স্যান্ডেল পরে, তাতে সেসব দেশের মানুষের কিছু যায় আসে না।
আমেরিকার আইনে পতাকা পোড়ানো নাকি কোন অপরাধ না। কিন্তু পতাকা নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণের অনুভূতিটা ভিন্ন। জাতীয় পতাকার অবমাননা করলে আমাদের যেমন কষ্ট লাগে, তাদেরও ঠিক একই অনুভূতি। আবেগ দিয়ে আন্দোলন হয় কিন্তু দেশ চালাতে বা দেশ গঠন করতে হলে দরকার হয় মেধা। আমাদের কাজে আমরা মেধার পরিচয় দিচ্ছি কী! আমরা দেশে যেমন, বিদেশে গেলেও আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতি করি।
অথচ ভারতের জনগণ যে দেশে বসতি গড়ে সেদেশের রাজনীতি করে, তারা সেদেশের পলিসি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। সেজন্য ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে প্যাটেলকে এফবিআই প্রধান বা তুলসী গ্যাবার্ডকে গোয়েন্দা সংস্থার চীফ বানানোর কথা ভাবেন। দয়া করে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যটা শুনবেন।
৪.
লেখাটা শেষ করবো পশ্চিমবঙ্গের এক বন্ধুর পাঠানো কয়েকটা লাইন দিয়ে—‘সব পরিবারেই কিছু ভালো খারাপ সদস্য থাকে। সেরকমই দেশের নাগরিকদের মধ্যেও এই বিষয় প্রযোজ্য। কষ্ট হয় এক লাইনে সমগ্ৰকে দাঁড় করিয়ে দিলে। এপার, ওপার সবখানেই এই ব্যপারটা হচ্ছে। সবাই মিলে মিশে থাকলে কত ভালো লাগে।’
কি সুন্দর ভাবনা!
সরকার যাইই ভাবুক, এটাই হচ্ছে এপারের জনগণের সাথে ওপারের জনগণের অনুভূতির বন্ধন।
লেখক: সাবেক সেনা কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।