শিশু শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, মাদ্রাসাশিক্ষক বরখাস্ত

শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষক হাফেজ আজহারুল ইসলাম
শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষক হাফেজ আজহারুল ইসলাম  © সংগৃহীত

এক শিশু শিক্ষার্থীকে (১০) শাসনের নামে হাত ও পায়ে শিকল পরিয়ে তালা দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভুশ্চি এলাকার ‘জামিয়াতুল আশরাফ মাদরাসার’। ওই শিক্ষকের নাম হাফেজ আজহারুল ইসলাম। তিনি মাদরাসার নাজেরা শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

জানা যায়, ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের হাজি সামছুল হক সুপারমার্কেটের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ১০টি রুম ভাড়া নিয়ে কয়েক বছর ধরে চলছে ‘জামিয়াতুল আশরাফ মাদ্রাসা’।

ওই মাদরাসার নাজেরা শিক্ষক আজহারুল ইসলাম গত বুধবার বিকেলে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে হাত ও পায়ে শিকল পরিয়ে নির্যাতন করেন। শিশুটি ওই রাতে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে ভুশ্চি মধ্যবাজারে এলে কয়েকজন তার বক্তব্য ভিডিও করে এবং শিকল খুলে দেয়। ভিডিওটি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান সালিশ বৈঠক করে সমাধান করে দেন। এসময় ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুর বাবা বলেন, ‘আমি একজন গাড়িচালক। অনেক আশা করে ছেলেটিকে কোরআন হেফজ করতে মাদরাসায় দিয়েছিলাম। ছেলে মাঝেমধ্যে পালিয়ে যেত। সে কারণে আমি বলেছিলাম, মাদ্রাসা থেকে যেন বের হতে না পারে। কিন্তু এভাবে শিকল দিয়ে বাঁধতে বলিনি।

এভাবে বেত্রাঘাত করতেও বলিনি। আমি ইউপি চেয়ারম্যানের সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।’

অভিযুক্ত শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটি বারবার মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায়। সে কারণে মাদরাসার গেট আটকানোর শিকল দিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ও পায়ে তালা মেরে আটকে দিয়েছি। আর বুধবার বিকেলে বেত্রাঘাত করে আমি নিজেই ওষুধ খাওয়াইছি। আমি এই ঘটনায় অনুতপ্ত।’

লালমাই থানাধীন ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।’


সর্বশেষ সংবাদ