একটা করে রোজা শেষ হতো আর ঈদ এগিয়ে আসছে ভেবে খুবই এক্সাইটেড থাকতাম
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৫ AM , আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৬ AM

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। তার বেড়ে উঠা নোয়াখালীর সুবর্ণচরে। শৈশব-কৈশরে ঈদ করতেন পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। তবে এখন তার ঈদ উদযাপন বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।
ছোটবেলার ঈদকে কেন্দ্র অনেকের মতো তারও কিছু স্মৃতি জমা রয়েছে। ছোটবেলার ঈদের সেই স্মৃতি স্মরণ করে নাছির বলেন, ঈদের সময়ে বাজারকেন্দ্রীক আড্ডাতে আমাদের স্কুলের যেসব বন্ধুরা রয়েছে তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে আমি বড় হয়েছি। ছোটবেলায় একটা করে রোজা যখন শেষ হতো ঈদ এগিয়ে আসছে ভেবে এক্সাইটমেন্ট ছিল অনেক বেশি।
‘‘তারাবির নামাজ পড়তাম সব বন্ধুদের নিয়ে। ঈদেও সবসময় বন্ধুদের নিয়ে নামাজ পড়তাম। সেটা এখনও বাড়ি গেলে চেষ্টা করি পড়ার তবে, ওই দিনগুলো সবচেয়ে স্পেশাল ছিল। চার-পাঁচ ঈদে আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও মামলার কারণে বাড়ি যেতে পারিনি। বাড়ির বাইরে অন্য কোথাও ঈদ করবো এটা আমি কখনও চিন্তা করিনি।’’
বড়বেলার সাথে ছোটবেলার ঈদের পার্থক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-চাচা এবং আত্মীয়ের কাছ থেকে সালামি পেতাম এখন সেটা আর হয় না। এখন আমি আর আমার পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। গত ১৫-১৬ বছর যাবত আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একদম কর্মী থেকে এখন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। এ দীর্ঘ সময় ধরে যারা এ দলের সঙ্গে রয়েছে তারাও পরিবার থেকে কোনো অংশে কম নয়।
জীবনে সবচেয়ে খারাপ ঈদ কাটিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময়। সেই সময়ের কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, আমি প্রথমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে পারিনি। তখন ২০০৭ সাল, আমার মনে আছে ‘সি’ ইউনিটের যেদিন রেজাল্ট দিয়েছে তার এক-দুইদিন পর রোজার ঈদ ছিল। সেবার ঈদে আমি ঢাকায় থেকে ছিলাম। মন অনেক বেশি খারাপ ছিলো, খুব কষ্ট হয়েছে হীনমন্যতায় ভুগেছিলাম। তার পরের বছর (সেকেন্ড টাইম) পরীক্ষা দিয়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাই এবং এটি আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা।
ঈদ কিংবা রোজা ধর্মীয় এসব রীতি পালনে সার্বজনীনতার শিক্ষা দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগভাবে একটি ঘটনা বলতে চাই, প্রথম যখন ঢাকায় আসি তখন আমার একটা সনাতন ধর্মালম্বী বন্ধু ছিল সে রমজান মাসে ইফতার বানানোর সময় শেষের দিকে আমরা যখন ক্লান্ত হয়ে যেতাম তখন আমার সেই বন্ধু দোকান থেকে খাবার নিয়ে আসতো এবং সেগুলো সাজাতো এবং আমরা একসঙ্গে ইফতার করতাম। অনেকের ভিন্নমত থাকতে পারে কিন্তু এই যে সহমর্মিতা এবং সহযোগিতা এটিই আমাদের সার্বজনীনতার শিক্ষা দেয়।
গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা প্রকাশ করছি এবং আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। যারা সন্তান হারিয়েছেন তারা হয়তো ফিরে পাবেন না কিন্তু যারা গুম হয়েছে তারা তাদের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় রয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি এই অন্তর্বতীকালীন সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ‘ঈদ মোবারক’ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে এবং শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদল যে ইতিবাচক রাজনীতি শুরু করেছে সেখানে তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি এবং ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।