ঢাবির ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান

ভাস্কর্য শিল্পের বিকাশে দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন দরকার

ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান
ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান

এএএম কাওসার হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের অন্তর্গত ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক। শিক্ষাজীবনে বিএফএ শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, এরপর এমএফএ করেন ভারতে। চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছর পার করছে। এ দীর্ঘ সময়ে বিভাগের অগ্রগতি, সফলতা, ব্যর্থতা নিয়ে কথা হয় এ এ এম কাওসার হাসানের সাথে। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে ভাস্কর্যের ইতিহাস ও বাধা বিপত্তি নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুর হোসেন ইমন

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছর পার করছে। এ সম্পর্কে কিছু বলুন ?

কাওসার হাসান : শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের নির্দেশে আব্দুর রাজ্জাক (চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর) চারুকলা অনুষদে এ বিভাগটি গড়ে তোলেন। ২০১৮ সালে ভাস্কর্য বিভাগ ৫৫ বছর পার করছে, তার পাশাপাশি এ বছরটাতে চারুকলা অনুষদের সূচনার ৭০ বছর এবং আব্দুর রাজ্জাক স্যারের জন্মের ৮৬ বছর পার করছে। তাই বছরটি আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এ উপলক্ষে এবারে বিশেষ আয়োজনে বিভাগের শিক্ষার্থীদের তৈরি বিভিন্ন শিল্পকর্মের প্রদর্শনী চলছে। আব্দুর রাজ্জাকের স্মরণে আমরা বিশেষ সেমিনারেরও আয়োজন করছি। যেখানে থাকবেন তার পরিবারের সদস্য ও বিভাগের অ্যালামনাইরা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ দীর্ঘ সময়ে বিভাগ কতটুকু সফল বলে আপনি মনে করছেন ?

কাওসার হাসান:  প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভাগটি বিভিন্নভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। ভাস্কর্য শিল্পে অবদান রাখা দেশের বিখ্যাত ভাস্কররা এ বিভাগেরই শিক্ষার্থী। বিভাগে একটি অ্যালামনাই আছে। অ্যালামনাইরা বিভিন্নক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছেন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একটি দেশে ভাস্কর্যের প্রয়োজনীয়তা কোন জায়গায়?

কাওসার হাসান: ভাস্কর্য একটি দেশের সংস্কৃতির অংশ। এটির মাধ্যমে একটি দেশ ও এর কৃষ্টি, সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ইতিহাস চর্চায়ও ভাস্কর্যের গুরুত্ব রয়েছে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস:  দেশের ভাস্কর্য শিল্পে কোনো বাধা দেখেন কিনা ?

কাওসার হাসান:  এদেশে বিভিন্ন কারণে ভাস্কর্য শিল্প বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ফিগারেটিভ কিছু করতে গেলে এখানে সামাজিক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ভাস্করদের বিভিন্নক্ষেত্রে ধর্মীয় বাধার মুখোমুখি হতে হয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভাস্কর্য শিল্পের বিকাশে কোন ধরণের উদ্যোগ প্রয়োজন ?

কাওসার হাসান: এ শিল্পের বিকাশের জন্য সরকারের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি সমাজের মানুষেরও চিন্তারক্ষেত্রে পরিবর্তন দরকার। ভাস্কর্যকে পজিটিভ ওয়েতে দেখতে হবে। মূর্তি আর ভাস্কর্য এক না। বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। আমরা আশাবাদী বিভিন্ন বাধা বিপত্তি স্বত্বেও এদেশের শিল্পীরা বসে নেই। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি উদ্যোগে ও শিল্পীদের নিজ উদ্যোগে ভাস্কর্য হচ্ছে। আমরা একটি সিস্টেমেটিক পদ্ধতিতে এগুতে চাই। দেশের যেসব পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা আছে সেখানে ভাস্কর্য বিভাগ করা হোক। এগুলো নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দেশের ভাস্কর্য শিল্পের আগামী দিনের সম্ভাবনার দিক নিয়ে বলুন।

কাওসার হাসান: আস্তে আস্তে দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে। মানুষ এখন বিষয়গুলো নিচ্ছে। আমাদের আরও কাজ করতে হবে। বাধা বিপত্তি আসবে, তা মাড়িয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ ।

কাওসার হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ