পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছি, আর বিসিএস দেয়ার ইচ্ছা নেই

তারিক-উল্লাহ শোভন
তারিক-উল্লাহ শোভন  © টিডিসি ফটো

৪৩তম বিসিএসে এম এম তারিক-উল্লাহ্‌ শুধু নিজের পছন্দের পুলিশ ক্যাডারই পাননি, এই ক্যাডারে প্রথমও হয়েছেন তিনি। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক পাসের পর তিনি বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলেন।

মাগুরার সরকারি আরএসকে এইচ মডেল মাধ্যমিক স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং নটর ডেম কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তারিক। তার বর্ণাঢ্য শিক্ষা জীবন ও বিসিএসে সাফল্য নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের। তার কথাগুলো শুনেছেন—তাওফিকুল ইসলাম হিমেল

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন। নিজের এমন সাফল্যে আপনার অনুভূতি কেমন?
তারিক-উল্লাহ শোভন: খুবই ভালো লাগছে। এটা আমার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এতে আমার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সকলেই খুশি। আর প্রথম হওয়ার আনন্দটা একটু বেশিই। তবে এরকম ফলাফল আমার কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জানতে চাই। 
তারিক-উল্লাহ শোভন: আমি মাধ্যমিক পাস করেছি মাগুরার সরকারি আরএসকে এইচ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করি। এরপর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে ২০১৯ সালে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে বিএসসি শেষ করেছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কখন থেকে বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করেছেন, অনুপ্রেরণায় কে ছিলেন?
তারিক-উল্লাহ শোভন: বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা শেষ করে ২০২০ সাল থেকেই আমি বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমার বড় অনুপ্রেরণা ছিল আমার বাবা-মা ও বড় মামা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একজন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে প্রস্তুতির সময়টা কেমন ছিলো?
তারিক-উল্লাহ শোভন: বিসিএসের দীর্ঘসূত্রিতা আমাকে বেশ ভুগিয়েছে। বিসিএসের এ জার্নির মাঝে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অনেক সুযোগ থাকলেও বিসিএসেই ফোকাস করেছি। তবে বিসিএসের প্রস্তুতির এ সময়টাতে পড়ালেখার অংশটুকু ভালোই উপভোগ করেছি।

May be an image of 1 person, suit, monument and text

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এর বাইরে প্রস্তুতির বিশেষ কোনো টেকনিক ছিলো কিনা? কোন বিষয়টি আপনাকে প্রস্তুতিতে এগিয়ে রেখেছিল বলে মনে করেন।
তারিক-উল্লাহ শোভন: যেকোনো বিষয়ের কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে বারবার রিভিশন দেওয়াটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলা থেকেই পত্রিকা ও ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস থাকায় বাংলা, বাংলাদেশের বিষয়বলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে লেখার মানে ভিন্নতা ছিল আমার।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্যাডার চয়েজ সম্পর্কে বলুন। আপনি কীভাবে দিয়েছিলেন? কোন কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে ক্যাডার চয়েজ দেওয়া উচিৎ।
তারিক-উল্লাহ শোভন: পুলিশ, প্রশাসন, কাস্টম ক্যাডার চয়েসের একমাত্র পদ্ধতি হলো নিজের ইচ্ছার প্রাধান্য দেয়া। আমার পছন্দের শীর্ষে থাকায় পুলিশ ক্যাডার এক নম্বরে দিয়েছি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এক্ষেত্রে পুলিশের পরে ফরেন ক্যাডার রাখিনি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি তো ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতেও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ৪৩তম বিসিএসে এখন নিজের পছন্দের ক্যাডার পেয়েছেন।
তারিক-উল্লাহ শোভন: হ্যাঁ, ৪৩তম বিসিএস আমার দ্বিতীয় বিসিএস, তবে এটাই ছিল প্রথম ভাইভা। ৪৫তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে পাস করে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছি। তবে যেহেতু ইতিমধ্যে আমি আমার পছন্দের ক্যাডার পেয়েছি, তাই আর ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা দেয়ার ইচ্ছা নেই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যারা বিসিএস দিতে চান, তাদের প্রতি পরামর্শ কি থাকবে?
তারিক-উল্লাহ শোভন: আমি মনে করি পরামর্শ দেয়ার মত যোগ্যতা এখনো আমার হয়নি। শুধু বলবো, এই তুমুল প্রতিযোগিতায় নিজের অবস্থান সম্পর্কে নিজেকে আশ্বস্ত করুন। এরপর ধৈর্য ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ করুন। অল্প অল্প করে নিজেকে এগিয়ে নিন, পরিবার ও বন্ধুদেরকে সময় দিন। ধারাবাহিকতা রক্ষা এখানে অন্যতম প্রধান কৌশল।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চাকরিপ্রার্থীদের বিসিএসকে একমাত্র লক্ষ্য বানানো কি ঠিক?
তারিক-উল্লাহ শোভন: কখনোই না। চাকরি প্রার্থীদের তুলনায় এখানে শূন্যপদ একেবারেই নগণ্য। নিজের আকাঙ্ক্ষা ও সহজাত ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যান্য অপশন অবশ্যই খোলা রাখতে হবে। নিজের পঠিত বিষয়ের চাকরিতেও চেষ্টা করা উচিত।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই।
তারিক-উল্লাহ শোভন: ক্যাডার হলেও পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা অর্জনের ইচ্ছা আছে। একটি সুখী-সমৃদ্ধ প্রত্যাশিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেকে প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে চাই।


সর্বশেষ সংবাদ