ব্যথা সারাতে কার্যকর ও সাশ্রয়ী যন্ত্র উদ্ভাবন ঢাবির গবেষকদের

  © সংগৃহীত

সাশ্রয়ী মূল্যে ঘাড়, কাঁধ, হাঁটু ও কোমরব্যথা সারানোর যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইবিটের গবেষকরা। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত পালস ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড (পিইএমএফ) পদ্ধতি প্রয়োগের যন্ত্র ইলেক্ট্রো হেলথ ব্যবহার করে এসব ব্যাথা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন বয়সের মানুষের এ ধরনের ব্যাথা হয়। অনেকে কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে ঘাড়ে, কোমরে কিংবা তরুণরা খেলাধুলা করতে গিয়ে হাটুতে ব্যাথা পান। আরও নানাভাবে ব্যাথা হতে পারে। যন্ত্রটি ব্যবহার করে সহজেই ঘাড়, কাঁধ, পিঠ, কোমর এবং হাড়ের জয়েন্টের ব্যথার চিকিৎসা ঘরে বসেই করা যাবে।

যন্ত্রটি উদ্ধাবনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যপক খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। তিনি বলেন, বিগত প্রায় ৬০ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিইএমএফ পদ্ধতিতে চিকিৎসা হচ্ছে। বর্তমানে মূলধারার চিকিৎসায়ও এটি জনপ্রিয় হচ্ছে।

খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখনো এর ব্যবহার করতে পারছে না। কারণ বিদেশী যন্ত্রগুলোর দাম অনেক বেশি। এ জন্য আমরা নিজেরাই এই প্রযুক্তির উদ্ধাবন করেছি। এতে খুব স্বল্পদামে মানুষকে আমরা এর সুফল দিতে পারছি। 

তিনি জানান, মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে যন্ত্রটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তরুণ গবেষকদের নিয়ে আমরা একটি অংশীদারবিহীন কোম্পানি তৈরি করেছি। এর কোনো মালিক নেই, মুনাফা কেউ নিতে পারবে না। এতে জনগণ সুফল পাচ্ছে, দেশি হওয়ায় ওয়ারেন্টিও দিতে পারছি। এটি শুধু কোম্পানী নয়, একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক আন্দোলন।

এর ব্যবহারের বিষয়ে খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী বলে, ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনেসথেসিয়া, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট অ্যান্ড ফিল্ম মেডিসিন বিভাগে আমাদের তৈরি যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। তারা সুফল পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। আমরাও অনেককে এ যন্ত্রটি দিতে পেরেছি।

যন্ত্রটির কার্যকারিতার বিষয়ে তিনি বলেন, পিইএমএফ প্রযুক্তিতে একটি কয়েলের মধ্য দিয়ে খুব অল্প বিদ্যুৎশক্তি পালস প্রবাহ পাঠানো হয়। এতে চুম্বকীয় ফিল্ড তৈরি হয়। এগুলো সরাসরি আমাদের শরীরের ভেতরে ত্বক, মাংসপেশী, মাংস, হাড় এগুলোতে প্রবেশ করতে পারে। ভেতরে ঢুকে তা ইলেকট্রিক ফিল্ড তৈরি করে।

তিনি জানান, এর কারণে আমাদের সুক্ষ্ম যে রক্তনালীগুলো তা সম্প্রসারিত হয়। এতে অক্সিজেন বাড়ে, রক্তপ্রবাহও বাড়ে। পুষ্টি বাড়ে। দূষিত পদার্থ সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া বাড়ে। এতে ব্যাথাটা কমে আসে। এটি ধীরে ধীরে পুরোপুরি কমে যায়। বিশেষত বয়স্ক নারীদের হাড় ক্ষয় কমাতেও সহায়তা করে। তবে এজন্য দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

স্বাভাবিক ব্যাথা কয়েকদিনেই সমাধান হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এগুলো পরেই সব ধরনের কাজ করা যায়। ব্যাথা সেরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো যন্ত্রটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাইবিট জানিয়েছে, দুই বছরের গ্যারান্টিসহ ইলেক্ট্রো হেলথ যন্ত্রের দাম সাত হাজার ৫০০ টাকা পড়বে। তবে যদি ঘাড়ে ব্যথা না থাকে, তাহলে কাস্টোমাইজ নেক কয়েল ছাড়া সম্পূর্ণ প্যাকেজটি ছয় হাজার ৭০০ টাকায় নিতে পারবেন আগ্রহীরা। পরবর্তীতে শুধু কয়েলটি এক হাজার টাকায় কেনা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence