সন্তান প্রসবের এক ঘণ্টা পর পরীক্ষা দিলেন সাদিয়া
ভোলার দৌলতখানে সন্তান প্রসবের এক ঘণ্টা পর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সাদিয়া আক্তার নামের এক পরীক্ষার্থী। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসবও তাঁকে পড়াশোনা এবং পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় দৌলতখান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে সমাজকর্ম পরীক্ষায় অংশ নেয় এই শিক্ষার্থী। সাদিয়া আক্তার উপজেলার আলী আশরাফ কলেজের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে জাককানইবি না বলার আহ্বান উপাচার্যের
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাদিয়া আক্তার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সালাউদ্দিন কাজীর মেয়ে। এসএসসি পাস করার পর উপজেলার একই গ্রামের মেহেদি হাসানের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থেকেই সে পড়াশোনা চালিয়ে আসছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাদিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হয়। বাবার বাড়িতেই ছেলে সন্তানের মা হয় সে। সকাল ৯টায় একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে সাদিয়াকে তার মা এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: ২২ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হচ্ছে কাল
এব্যাপারে শিক্ষকেরা জানান, সে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছে।
আলী আসরাফ কলেজের প্রভাষক মিরাজুর রহমান জানান, ‘মেয়েটি ভালো ছাত্রী। ইন্টার প্রথম বর্ষে ভর্তির পর বিয়ে হয়। সে অন্য মেয়ের মতো নিয়মিত ক্লাস করেছে। সে দমে যায়নি। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসব, এসব বাধা তাকে থামাতে পারেনি। আশা করছে, সে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে।’
দৌলতখান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব গোবিন্দ প্রোসাদ সরকার জানান, ‘পরীক্ষা চলাকালে আমি মেয়েটির খোঁজ নিয়েছি। সে খুব সাহসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নেয়।’
আরও পড়ুন: এসএসসির ফল ঘরে বসে জানবেন যেভাবে
এ বিষয়ে দৌলতখান উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি জানার পর মেয়েটি যাতে ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করেছি। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই উপজেলায় শতাধিক মেয়ের বাল্যবিবাহ হয়েছে। সদ্য সন্তান প্রসবের কারণে সাদিয়ার পরিবার থেকে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। সাদিয়ার মায়ের একান্ত প্রচেষ্টায় সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ।’