এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে দৃষ্টিহীন সেই চয়ন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৭ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০৫ PM
অন্ধত্বকে জয় করে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পর এবার এইএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে দৃষ্টিহীন মেধাবী ছাত্র চয়ন তালুকদার। সে শ্রুতি লেখন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। স্বরুপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সিট পড়েছে তার।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) জগন্নাথপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে চয়ন। চয়ন জগন্নাথপুর পৌরসভার ভবানীপুরের নিতাই তালুকদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: অপহৃত ৪ শিক্ষার্থী উদ্ধার, আটক ৭
প্রথম পরীক্ষা শেষে কথা হয় চয়নের সাথে সে জানায়, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। জন্মান্ধ থাকায় পড়ালেখা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবে তার সমবয়সী ছোট বোন মৌসুমী তালুকদার যখন পড়ার টেবিলে বসে পড়ত তখন তার পাশে বসে শুনে শুনে সে পড়া মুখস্ত করে ফেলত। পরে সে ওই পড়া বলত অন্যজন লিখে দিত। লেখাপড়ার প্রচণ্ড আগ্রহ দেখে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার বাবা তাকে ভর্তি করে দেন। ২০১৯ সালে আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.৬ গ্রেট পয়েন্ট পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় শ্রুতি লেখন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নেয় চয়ন। তাকে শ্রুতি লেখনে সহায়তা করেন মাজহারুল ইসলাম। মাজহারুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষার সময়ও শ্রুতি লেখনের দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ায় কলেজছাত্রের আত্মহত্যা
চয়নের বাবা নিতাই তালুকদার বলেন, জন্মগতভাবে আমার ছেলের দৃষ্টিহীন। তবে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার অতি আগ্রহ ছিল। ভাইবোন মিলে একসঙ্গে পড়ালেখা করে এবার দুজন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। অভাব অনটনের কারণে ঠিকমতো তাদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারছি না।
চয়নের শ্রুতি লেখন মাজহারুল ইসলাম জানান, চয়ন লেখাপড়ায় খুবই ভাল। চয়ন বলে দেয়, আমি শুধু খাতায় লিখে দেই। এতে আমার কোনো অসুবিধা হয় না। বরং ভাল লাগে একজনকে সাহায্য করতে পেরে।
আরও পড়ুন: দাবি না মানলে ১৫ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের অনশন
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম জানান, চয়নকে শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখনের অনুমতি এনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তার সফলতা কামনা করি।