বিক্ষোভ করে এইচএসসি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেন ৩৬ শিক্ষার্থী

রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা
রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

এইচএসসি পরীক্ষায় প্রবেশপত্র না পেয়ে কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন ৩৬ শিক্ষার্থী। শনিবার (২৯ জুন) ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া ডিগ্রি কলেজে বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তালা খুলে দেওয়া হয়। বিকেলে স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওই ৩৬ জনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ফরম পূরণের ব্যবস্থা করা হয়। 

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আজ রবিবার (৩০ জুন) সকাল ১০টা থেকে শুরু হচ্ছে। অবশেষে এই ৩৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছেন।

রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ সূত্রে জানা যায়, আজকের শুরু হওয়া এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অনলাইনের ফরম পূরণের কার্যক্রমের শেষ তারিখ ছিল গত ৫ মে পর্যন্ত। আর ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা গেছে ৬ মে পর্যন্ত। তবে বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের সময় ৭ মে শুরু হয়ে চলে ১২ মে পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ সোনালী সেবার মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা গেছে ১৩ মে পর্যন্ত।

এই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য সাধারণ শাখায় ১৬৮ জন ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) শাখার প্রথম বর্ষে ১২৮ জন এবং দ্বিতীয় বর্ষে ১২৯ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। ফরম পূরণ শেষে ২৪ জুন বিএম শাখার শিক্ষার্থীদের ও ২৫ জুন সাধারণ শাখার শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে বলে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে তাদের প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেন।

কিন্তু কলেজের বিএম শাখার ২৫ জন ও সাধারণ শাখার ১১ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এসে জানতে পারেন, তাদের নামে প্রবেশপত্র আসেনি। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করে শনিবার দুপুর একটার দিকে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে কলেজের মূল ফটকে তালা দেন। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য কলেজের ল্যাব সহকারী মিজানুর রহমানের কাছে টাকা জমা দিয়েছিলেন। প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এসে তারা জানতে পারেন, মিজানুর রহমানে তাদের ফরম পূরণ করেননি।

শিক্ষার্থীদের কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ওই কমিটির মাধ্যমেই তাদের ফরম পূরণ করেছে। যারা ওই কমিটির মাধ্যমে ফরম পূরণ করেছে, তাদের সবারই প্রবেশপত্র এসেছে। তবে শোনা যাচ্ছে, ওই কমিটির বাইরে কেউ কেউ টাকা জমা দিয়েছে। যারা কমিটির বাইরে ফরম পূরণের টাকা দিয়েছে, তাদের দায় আমরা নেব না।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি সেন বিষয়টি জানতে পেরে তারা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঢাকা কার্যালয়ে সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মানবিক শাখার ১১ জন ও বিএম শাখার ২৫ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা হয় এবং প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। আজ ওই ৩৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এ বিষয়ে ইউএনও বেলায়েত হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তাদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা কেন ঘটল, তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ