কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগ
কিডনি রোগ  © সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে কিডনি রোগ বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা কারণে কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সঠিক সময়ে চিহ্নিত করা না গেলে এটি দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের লক্ষণগুলো স্পষ্টভাবে বোঝা কঠিন। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যেমন—বারবার প্রস্রাবের প্রবণতা, বিশেষ করে রাতে বেশি প্রস্রাব হওয়া। প্রস্রাবে ফেনা বা রক্ত দেখা যেতে পারে, যা কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার লক্ষণ। শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভূত হয়, কারণ কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য বের করতে না পারলে ক্লান্তি বেড়ে যায়। মুখমণ্ডল, হাত ও পা ফুলে যেতে পারে, কারণ কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যায়। এছাড়া, ত্বকে চুলকানি ও শুষ্কতা দেখা দিতে পারে এবং ক্ষুধামন্দা ও বমি বমি ভাব হতে পারে।

কিডনি রোগের বেশ কিছু কারণ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতিরিক্ত লবণ ও প্রসেসড ফুড গ্রহণ কিডনির জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত পানি না খেলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে গিয়ে কিডনির কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করা, ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি, বংশগত কারণেও কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিডনি সুস্থ রাখতে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা দরকার, যা শরীর থেকে বর্জ্য দূর করতে সহায়তা করে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত, বিশেষ করে লবণ, চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা দরকার। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করা কিডনির সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার, যা কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক বা অন্য কোনো ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি সুস্থ রাখতে হলে সচেতন জীবনযাপন করতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখতে হবে। কিডনি রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে বড় কোনো বিপদের সম্মুখীন হতে না হয়।


সর্বশেষ সংবাদ