মৌসুমি ফলের 8 স্বাস্থ্য উপকারিতা

মৌসুমি ফলের পুষ্টি উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
মৌসুমি ফলের পুষ্টি উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে  © প্রতীকী ছবি

চলছে মধুমাস জৈষ্ঠ্য। এ সময় আমাদের দেশে প্রচুর মৌসুমি ফলের দেখা মেলে। বিশেষ করে আম, জাম, কাঠাল, লিচু এবং জামরুল ফল বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এসব ফল দেহের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ফলমূলে বিদ্যমান বিভিন্ন খনিজ, ভিটামিন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুরুত্বপূর্ণ। এসব উপাদান শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। ফলে শরীর সুস্থ্য ও সুন্দর থাকে।  তাহলে চলুন মৌসুমি ফলের ৪টি স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয় জেনে নেই:

মৌসুমে ফলের ৪টি স্বাস্থ্য উপকারিতা:

ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: মৌসুমি ফলগুলোতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। ন্যাশনাল ইনিস্টিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, আমে থাকা ম্যাগনেফেরিন পলিফেনল অক্সিডেন্টিভ উপাদান স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাছাড়া মৌসুমি ফল জামরুল মানবদেহের প্রস্টেট ও স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কারণ এতে থাকা ভিটামিন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনে সুস্থ থাকার উপায়

অন্যদিকে এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সার কোষের ঝুঁকি হ্রাস করে। ফলে এসব ফলমূল খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এদিকে ক্যান্সারের কোষ নিয়ন্ত্রণকারী ফল লিচু। যার উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল নিয়ন্ত্রণ করে কোষকে সুরক্ষিত রাখে। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ ফল জাম। এ ফলে রয়েছে রেডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান। যা দেহে ক্যান্সার উৎপাদনকারী কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। 

হার্টকে সুরক্ষিত রাখে: হার্টের সুরক্ষায় মৌসুমি ফল অনেক উপকারী। এ ক্ষেত্রে আম অন্যতম ভূমিকা পালন করে। কারণ এ ফলে রয়েছে পটাশিয়াম, এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ম্যাগনেসিয়াম। যা হার্টে সুষ্ঠু রক্তের প্রবাহ সচল রাখে। পাশাপাশি রক্তের কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া হার্টের সুরক্ষায় তরমুজও বেশ উপকারী।

ন্যাশনাল ইনিস্টিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ)-এর গবেষণায় উঠে এসেছে, তরমুজে রয়েছে লাইকোপেন ও সিট্রুলাইন অ্যামিনো অ্যাসিড উপাদান। যা দেহে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বাড়িয়ে রক্তনালীকে প্রসারণ করে। ফলে হার্টের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাস পায়।

আরও পড়ুন: আমের প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য উপকারিতা

এছাড়া হার্টের সুরক্ষায় কাঁঠাল ও লিচু বেশ কার্যকরী। কারণ কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হার্টকে সুস্থ্য রাখে। অন্যদিকে লিচুতে থাকা পলিফেনল নামক উপাদান হার্টের প্রদাহ কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

হাড় মজবুত করে: হাড়ের সুস্থ ও মজবুত রাখতে মৌসুমি ফলগুলো বেশ কার্যকরী। কেননা লিচুতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং কপার হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষণ করে অস্টিওপোরোসিস ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া জামে থাকা ভিটামিন-কে হাড়ের স্বাস্থ্য গঠনে ভূমিকা রাখে। এমনকি ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ফল কাঁঠালও হাড় শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।

হজমে সহায়তা করে: আম, জাম, লিচু ও জামরুলের মতো মৌসুমি ফলগুলোতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি মানুষের হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, জামে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সেই সঙ্গে জামরুল হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিপাক তন্ত্রকে সুস্থ্য রাখে। এমনকি ফাইবার সমৃদ্ধ লিচু মলত্যাগ স্বাভাবিক করার পাশাপাশি পেট ফাঁপা, ব্যথাসহ সামগ্রিক পরিপাক তন্ত্রের উন্নতি ঘটায়।


সর্বশেষ সংবাদ