দৈহিক সুস্থতা ও সৌন্দর্য বর্ধনে শসার উপকারিতা

শশা এক-তৃতীয়াংশই খাওয়া যায়
শশা এক-তৃতীয়াংশই খাওয়া যায়  © প্রতীকী ছবি

প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমানোর পাশাপাশি রূপচর্চার উপকরণ হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে শসা। এতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরকে হাইড্রেট করার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টকে সুরক্ষিত রাখে। এমনকি শসায় থাকা ভিটামিন কে ও প্রদাহ প্রতিরোধী উদ্ভিদ যৌগ চোখের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া ত্বক ও ডার্ক সার্কেলের চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপকরণ হিসেবে বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে শসা। তাই এটিকে বিউটি সুপারফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গবেষণার তথমতে, একটি ৩০০গ্রাম খোসা ছাড়ানো কাঁচা শসাতে রয়েছে; ৪৫ ক্যালোরি, ১১ গ্রাম শর্করা, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম ফাইবার এবং ভিটামিন সি আরডিআই এর ১৪%, ভিটামিন কে ৬২%, ম্যাগনেসিয়াম ১০%, পটাসিয়াম ১৩%, ম্যাঙ্গানিজ ১২%। তবে শসায় কোন ধরণের চর্বির উপাদান নেই।

আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচের স্বাস্থ্য উপকারিতা

সাধারণত সবজি হিসেবে ভাবা হলেও শসা আসলে একটি ফল। সারা বিশ্বে আবাদ হওয়ার দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে এই ফল। শসায় ক্যালোরি কম হলেও ৯৬ শতাংশ পানি ও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। ফলটির এক-তৃতীয়াংশই খাওয়া যায়, তাই খোসাসহ ফলটি খেলে সর্বাধিক পরিমাণে পুষ্টি পাওয়া যায়। এ পর্যায়ে শসার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা তুলে ধরা হলো-

দেহের পানির চাহিদা পূরণে
শসা প্রায় ৯৬% পানি দিয়ে গঠিত, যা দেহে হাইড্রেশন বাড়ানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন তরলের চাহিদা মেটাতে সাহায়তা করে। দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম ধরে রাখতে পানির গুরুত্ব অনেক। কারণ দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য নিষ্কাশন ও পুষ্টির পরিবহনের মতো প্রক্রিয়াসমূহ পানির মাধ্যমে হয়ে থাকে।

ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেলথ-এর একটি গবেষণায় হাইড্রেশন অবস্থা মূল্যায়ন করতে চারশোর অধিক শিশুর খাদ্য রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। রেকর্ডে দেখা যায়, ফল এবং উদ্ভিজ্জ খাবার বৃদ্ধি করার ফলে হাইড্রেশন অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

ওজন হ্রাস
শসা ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। শসায় ক্যালোরি কম কিন্তু পানি বেশি থাকে। তাই অধিক পরিমাণ ক্যালরি মুক্ত থাকতে শসা সহায়তা করে। ফরে ওজন হ্রাস পায়।

আরও পড়ুন: গরমে দেহ ও মনকে সতেজ রাখবে তরমুজ

ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেলথ-এর একটি বিশ্লেষণে সাড়ে তিন হাজারের অধিক মানুষসহ ১৩টি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ জল ও কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। যার সব গুণ শসায় থাকায় ওজন হ্রাসে এটি বেশ কার্যকর।

ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমায়
দেহে শর্করা ও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে শসা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেলথ-এর টেস্ট-টিউব এবং প্রাণীজ গবেষণা প্রথমিকভাবে দেখা গেছে, শসা রক্তে শর্করাকে কমানোর পাশাপাশি ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধে সাহায়তা করে। শসার খোসায় থাকা উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি শসা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।

কোষ্টকঠিন্য দূর করে
ডিহাইড্রেশনই কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান ঝুঁকির কারণ। এতে দেহে জলের ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটে এবং মল ত্যাগ সমস্যা সৃষ্টি হয়। তবে শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, যা হাইড্রেশন বাড়ায়। ফলে এ হাইড্রেটেড মলের সামঞ্জস্যতা উন্নত করে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এমনকি শসায় পাওয়া দ্রবণীয় ফাইবার মলত্যাগের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন: আমের প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য উপকারিতা

ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেলথ-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শসা পেকটিন অন্ত্রের পেশীগুলির নড়াচড়াকে ত্বরান্বিত করে। এমনকি সমস্ত অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

চোখের যত্নে
চোখের জন্য শসা বেশ উপকারী। সৌন্দর্যচর্চার অংশ হিসেবে অনেকে শসা গোল করে কেটে চোখের পাতায় বসিয়ে রাখেন। এতে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা যেমন অপসারিত হয়, তেমনি চোখের জ্যোতি বাড়াতেও কাজ করে। চোখের প্রদাহপ্রতিরোধক উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় শসা ছানি পড়া ঠেকাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।

দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো এমন অণু, যা র‌্যাডিকেল নামে পরিচিত অবিকৃত ইলেকট্রনের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে মুক্ত একটি প্রতিক্রিয়াশীল পরমাণু গঠন করে। ফলে তা ক্ষতিকারক অক্সিডেশনকে অবরুদ্ধ করতে পারে। মূলত ফ্রি র‌্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ক্যান্সার, হার্ট, ফুসফুস ও অটোইমিউন রোগের সাথে যুক্ত। কিন্তু শসাসহ অন্যান্য ফল ও শাকসবজি বিশেষত উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ হওয়ায় এই অবস্থার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেলথ-এর টেস্ট-টিউব গবেষণায় শসার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি তদন্ত করে দেখা গেছে, শসায় ফ্ল্যাভোনয়েড ও ট্যানিন রয়েছে। যা যৌগের দুটি গ্রুপ ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল ব্লক করতে বিশেষভাবে কার্যকর।

তথ্য সূত্র-হেলথ লাইন


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence