অক্টোবরে আরও ভয়ংকর হতে পারে ডেঙ্গু

ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ৮ প্রাণ
ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ৮ প্রাণ  © সংগৃহীত

সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় হাসপাতালগুলোয় রোগীর চাপ বাড়ছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন ঢাকার এবং ৩ জন খুলনা বিভাগে। এর ফলে ডেঙ্গুতে এ বছরের ৯ মাসে ১৭৪ জনের প্রাণ গেলো। একই সময়ে হাসপাতালে ১ হাজার ১৭ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর থেকেও ভয়ংকর হতে পারে অক্টোবর।

বুধবার (২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৭ জন নতুন রোগী। এর মধ্যে রাজধানীর হাসপাতালে ৩৯১ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬২৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। 

অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে, প্রথম ৯ মাসে মৃত্যু হয় ১৭৪ জনের। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে মারা গেছে ৯১ জন। আগের আট মাসে মৃত্যু হয় ৮৩ জনের। এই সময়ে আক্রান্তের হারও বেড়েছে উল্লেখ্যযোগ্য হারে। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৯ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে ২২ হাজার ২৫৮ জন। 

গত এক মাসে ডেঙ্গুর এমন ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দুটি কারণ বলছেন– আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টির কারণে রোগটি বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার অভাব। স্থানীয় সরকারের অব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বয়ের অভাব বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এর আগে গত এক দশকে (২০১৪-২০২৩) সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর ‘পিক সিজন’ হয় পাঁচ বার। অক্টোবরে তিন বার, নভেম্বরে ও আগস্টে একবার করে পিক সিজন হয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর থেকেও ভয়ংকর হতে পারে অক্টোবর। গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এরমধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও নাজুক হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ অতিবৃষ্টির কারণে অনুকূল পরিবেশ পাওয়ায় এডিস মশার ঘনত্ব বেড়েছে। কোনো এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে গেলে জরুরি ভিত্তিতে হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করতে হয়। এর জন্য জরিপ ও রোগীর সঠিক তথ্য গুরুত্বপূর্ণ। এবার দুটির একটিও করা হয়নি। এখন জনসাধারণকেও সরাসরি সম্পৃক্ত হতে হবে। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস কার্যক্রম চালাতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ