আজ ঢাকায় আসছেন ট্রাম্পের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা

ট্রাম্প প্রশাসনের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা
ট্রাম্প প্রশাসনের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা  © সংগৃহীত

তিন দিনের সফরে আজ (বুধবার) ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের দুই শীর্ষ কূটনীতিক—দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন চুলিক এবং পূর্ব ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এন্ড্রু হেরাপ। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর হতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সফরসূচি অনুযায়ী প্রথমে ঢাকায় পৌঁছাবেন নিকোল এন চুলিক। এরপর আলাদা ফ্লাইটে পৌঁছাবেন এন্ড্রু হেরাপ এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসন। সফরের শুরুতেই মার্কিন দূতাবাসে ঢাকার বর্তমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তাঁরা। এরপর প্রতিনিধিদলের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকার ইস্যু বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। পাশাপাশি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন করা হলেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে শেষ মুহূর্তে প্রতিনিধিদলের সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনায় আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক, অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়টি। অন্যদিকে, মার্কিন প্রতিনিধিদল মিয়ানমার পরিস্থিতি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে উভয় দেশের অবস্থান স্পষ্ট জানতে চাইবে বলে জানা গেছে। আলোচনায় থাকবে অবৈধ অভিবাসী প্রত্যাবাসন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও।

সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েনের ইঙ্গিত মিলেছে গেল বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই। অপরদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে—সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরও এই প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য। এ সফর সম্পর্কে ঢাকার কাছে জানতে চেয়েছে ওয়াশিংটন, যার জবাবও ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে দায়িত্বশীল এক কূটনীতিক জানান, ঢাকায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরের মূল ইস্যু হতে যাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সহায়তায় অর্থায়ন কমাতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে, আর এ সফরের মধ্য দিয়ে তারা বাংলাদেশকে সেই বার্তা জানাতে পারে। অর্থায়ন কতটা কমবে বা ভবিষ্যতে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা কী, তা নিয়েও ধারণা মিলতে পারে এই সফর থেকে। আগামী বছরের শুরুতে মিয়ানমারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সে নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইবে এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পাশে চাওয়ার বার্তা দিতেও পারে।


সর্বশেষ সংবাদ