শাবিপ্রবি ছাত্র হত্যার সময় উপস্থিত প্রেমিকার রহস্যজনক আচরণ
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিকার রহস্যজনক আচরণে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত থাকলেও প্রথমে তা অস্বীকার করেছিলেন। ফলে হত্যাকাণ্ডের নানা উত্তর নিয়ে ধাঁধা তৈরি হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীকালুর টিলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম বুলবুল আহমেদ। তিনি শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার প্রেমিকা শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার সময় বুলবুলের প্রেমিকা তার সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম বুলবুলকে হাসপাতালে নিতে সহযোগিতা চান। ঘটনার পর দুই জায়গায় দুই রকম বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। প্রথমে ওই ছাত্রী ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানালেও পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনাস্থলে বুলবুলের সাথে থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: বান্ধবীর সাথে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না নিহত নর্থ সাউথ ছাত্রের
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাবিপ্রবির চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, বুলবুলকে উদ্ধারের পর তার লাশ প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান ওই ছাত্রী।
এদিকে বুলবুলের প্রেমিকার আচরণ রহস্যজনক লেগেছে পুলিশের কাছেও। বুলবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর বুলবুলের প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শাবিপ্রবি ছাত্র নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে বুলবুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার আচরণ আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে রাবিতে প্রক্সি দেন ঢাবি ছাত্র
তিনি আরও বলেন, ওই ছাত্রী আমাদের একেক সময় একেক তথ্য দিয়েছেন। প্রথমে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানালেও পরবর্তীতে ঘটনার সময় উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া একবার বলছেন দুইজন হত্যা করেছে; আবার বলছেন তিনজন ছিলেন। আমরা সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই মামলার তদন্ত করছি।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বুলবুলের প্রেমিকাকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে প্রক্টর অফিসেই অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে জানতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইসরাত ইবনে ইসমাইলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে সেটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেছা হল সংলগ্ন গাজীকালুর টিলায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের হাতে শিক্ষার্থী বুলবুল ছুরিকাহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার ও পরে উন্নত চিকিৎসার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।