‘মুরগির রক্ত দেখলে আঁতকে উঠতেন’ ইফতি!
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন, বুয়েট ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল। সকাল রাজবাড়ী জেলা শহরের লক্ষিকোল এলাকার মৃত ফকির মোশারফ হোসেনের ছেলে। সকাল বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভবাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পড়ুন: এই রায় আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার শিক্ষা দেবে: ঢাবি ভিসি
এদিকে, রায় ঘোষণার পর তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শুনশান নিরাবতা। ঘরে সকালের ছোট ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী রাফি মোশারফ স্বপ্নিল ছাড়া কেউ ছিলো না। তার মা রাবেয়া মোশারফ অবস্থান করছিলেন ঢাকায়।
এ সময় পাশের বাড়িতে থাকা ইফতি মোশারফের চাচা আব্দুস সালাম ফকির জানান, আদালতের রায় তাদের মনমত হয়নি। যে কারণে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
পড়ুন: রাষ্ট্রপতির আসামিদের ক্ষমা করাই মহৎ কাজ হবে: ছাত্রলীগের সাবেক নেতা
তিনি বলেন, ইফতি ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র। এইচএসসি পাস করার পর মেডিক্যল ও বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পায়। কাটা ছেড়া করতে হবে ভেবে সে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়নি। মূলত ইফতি মুরগি জবাই করতেও ভয় পায়। যে ছেলে মুরগির রক্ত দেখলে আঁতকে উঠতো সে এমন ঘটনায় জড়িয়ে পরবে তা ভেবে পাচ্ছি না।
তিনি জানান, ইফতির এই অবস্থা মেনে নিতে পারেননি তার বাবা মোশারফ। যে কারণে ঘটনার কয়েক মাস পর ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মোশারফ মারা যান। ওই ঘটনার পর থেকে পুরো পরিবার মানসিক ভাবে কষ্টের মধ্যে রয়েছে।
আরও পড়ুন: এই মামলায় প্রকৃত ও ন্যায়বিচার করা হয়েছে: আইনমন্ত্রী
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই দিনগত রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।