ক্যাম্পাস বন্ধ, বর যাত্রীর বাহন হাবিপ্রবির বাস

হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যবহৃত বাস
হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যবহৃত বাস  © ফাইল ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে বর যাত্রীর বহরে ব্যবহার করা হয়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যবহৃত বাস। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিয়ে বাড়িতে বর যাত্রীর বহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহারের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে।

জানা যায়, শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীক্ষা শাখার অফিস সহায়ক মো. আতাউর রহমানের চাচাতো ভাইয়ের বিয়ের বর যাত্রীর বহরে বন্ধ ক্যাম্পাসে পড়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ব্যবহার করা হয়। দিনাজপুর জেলার ৮নং শংকরপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ওই বিয়ে বাড়িতে বড় যাত্রীর বহর হিসেবে দু’টি বাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ নম্বর টাটা মিনি বাসটিও দেখা গেছে।

বর যাত্রীর বহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহারের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন ওই বাসের চালক মো. রাজু এবং গেটম্যান মো. সালাউদ্দিন। তারা জানান, ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে নিরীক্ষা শাখার অফিস সহায়ক মো. আতাউর রহমান ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোন স্টাফ ছিলেন না।

বিয়ের বর যাত্রীর বহরে বাস ব্যবহারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইংরেজি বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাসেল কবির জানিয়েছেন, বর যাত্রীর বহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস দেখে প্রথমে কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। পরে কাছে গিয়ে দেখি ঘটনা সত্য। যখন আমার বন্ধুরা পরস্পরের সাথে বলাবলি করছিলো আমাদের বাস এভাবে ভাড়া দেয়া হয় কিনা, তখন আমি কোন উত্তর দিতে পারিনি।

বিয়ে বাড়িতে হাবিপ্রবির বাস

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বাস চালক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস এভাবে ব্যবহার করা অত্যন্ত অন্যায়। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের পিকনিক বা বিয়ের অনুষ্ঠানের নামে বাস বরাদ্দ নিয়ে ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে উপর থেকে নির্দেশ দিলে আমাদের মতো সাধারণ চালকদের আর কিছু করার থাকে না।

জানতে চাইলে নিরীক্ষা শাখার ওই অফিস সহায়ক আতাউর রহমান জানান , আমি পরিবহন শাখার পরিচালকে জানিয়েই বাসটি ব্যবহার করেছি। তিনি অনুমতি না দিলে বাস নেওয়ার সুযোগ ছিল না। অনুমতি নিয়েই এটি ব্যবহার করা হয়েছে, এখানে দোষের কিছু নেই।

এদিকে পরিবহন শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মফিজুল ইসলামও আতাউর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহারের অনুমতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সে (আতাউর রহমান) তার ছোট ভাইয়ের বিয়ের কথা বলে বাস রিকুইজিশন নিয়েছিলো। এর বাইরে আমি কিছু জানতাম না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস এভাবে কেউ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারে কিনা জানতে চাইলে মফিজুল ইসলাম জানান, এসব ব্যাপার নিয়ে আমরা খুব বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে রয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি দায়িত্ববান না হোন, তাহলে এসব আমার একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন ভিসি প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে বাস রিকুইজিশন নিতে পারে। তবে কোন ক্রমেই তা মিসইউজ (অপব্যবহার) করা যাবে না। এখানে যদি অপব্যবহার হয়ে থাকে এটা দুঃখজনক। আমি সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।


সর্বশেষ সংবাদ