রাগিংয়ের বিচার না পাওয়ায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন
- বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ AM , আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ AM
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ ফাহাদকে মির্জা আজম হলের গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) র্যাগিং ও ব্যুলিং প্রতিরোধ কমিটি বরাবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন না থাকায় সে দিনই শিক্ষকেরা উভয় পক্ষকে নিয়ে খোলা আলোচনায় বসেন। এ খোলা আলোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফাহাদ তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, 'আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে আমাকে রুমে ডেকে রাতভর মানসিক নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং আমাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মানসিক ভাবে আমি প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমার উপর ঘটে যাওয়া এই অন্যায়ের সুষ্ঠু বিচার পেতে এবং ভবিষ্যতে অন্য শিক্ষার্থীরা যেন র্যাগিংয়ের শিকার না হয়, সে জন্য আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।'
তিনি আরও বলেন, '৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা র্যাগিং ও ব্যুলিং বন্ধে ও আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা ঘটনা জানার জন্য আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরপরই আমাদের সম্মানিত স্যাররা দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত দেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী র্যাগিং ও বুলিং কমিটিতে আমি যথাযথ অভিযোগ দাখিল করেছি। অভিযুক্তরা এখনো হলে অবস্থান করছে, যা আমাকে অত্যন্ত অনিরাপদ অনুভূত করছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।'
সংবাদ সম্মেলনের পর এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে মেহরাব হোসাইন অপির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর ভরসা রাখি। শিক্ষকসহ ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত সবাইকে নিয়ে বসে সবার থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা কোন সিদ্ধান্ত দিলে মানবো কিনা। সেখানে আমরা দুপক্ষই বলেছি, মানবো। এটা স্যারেরা আগেই নিশ্চিত করে নিয়েছে। স্যারেরা যেটাই দিক আমরা মানতে বাধ্য। তাদের কাছে যেটি ঠিক মনে হয়েছে সেটা রায় দিয়েছে। দু-পক্ষই মেনেছে। আমরা সবাই এ বিচারে সন্তুষ্ট। সে (ভুক্তভোগী) খুশি হবে কিনা সেটা নিতান্তই ওর ব্যাপার।'
চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর ড. আব্দুস ছাত্তারের কাছে মুঠোফোনে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং বুলিং কমিটির আহ্বায়ক মৌসুমী আক্তার বলেন,'র্যাগিং ও বুলিং কমিটি বরাবর যে আবেদন দেওয়া হয়েছে সেটার ফরমালিটি কিন্তু ভিন্ন,অফিসিয়ালি। প্রশাসন যদি আমাকে তদন্ত করার জন্য মৌখিক বা লিখিত অনুমতি দেয়, তখন যে কমিটিকে দায়িত্ব দিবে তারা তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট জামা দিবে। প্রক্টর ও চেয়ারম্যান সবাই চিন্তা করেছেন যে, যেহেতু প্রশাসন না থাকায় ফরমাল ওয়েতে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাই ক্যাম্পাসের যেন ক্ষতি না হয় এজন্য সবার সাথে আলোচনা করে ওখানে মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে।'
বিশ্ববিদ্যালয় মির্জা আজম হলের হাউস টিউটর সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল হোসেনে বিষয়ে বলেন, 'র্যাগিং ও ব্যুলিং প্রতিরোধ কমিটি বরাবর যে অভিযোগপত্র দিয়েছে এবং তার প্রতিলিপি হলের হাউস টিউটর এবং সহকারী প্রক্টর বরাবরও দিয়েছে। সবাইকে সাথে নিয়ে যে মিটিং হয়েছে সেটি কোন পূর্ব নির্ধারিত মিটিং ছিল না। ক্লাস চালু থাকায় ধরে নিয়েছিলাম উভয় পক্ষই কাছাকাছি আছে, তাই সাথে সাথে আলোচনা করে একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি।যাতে একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চালানো যায়।'