কুয়াশায় চাদরে অন্য এক সৌন্দর্য চুয়েট ক্যাম্পাসে

চুয়েট ক্যাম্পাস
চুয়েট ক্যাম্পাস  © সংগৃহীত

মেরু এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে বছরের শীতলতম ঋতু হলো শীতকাল। শীতকাল সাধারণত শরতের পরে এবং বসন্তের আগে আসে। এবারে শীতের আমেজ যেন হেমন্তেই শুরু হয়েছে। সাথে তার আভিজাত্য জানান দিচ্ছে। প্রকৃতি ও জনমানব বহু প্রতীক্ষিত শীতের ছোঁয়ায় নবরূপে সজ্জিত হয়েছে। শীতকাল এলেই চারিদিক এ পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম পড়ে।

শীতকাল মানেই বাতাসে ভেসে আসে খেজুর রসের মিষ্টি গন্ধ। শহরাঞ্চলে দোকানে পিঠা বিক্রয় করা হয়। শীতের সকালে গ্রামের মানুষেরা শীত নিবারণের জন্য আগুনের কুন্ড জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে। ভোরে ঘাসে জমে থাকা শিশিরবিন্দু পায়ে শিহরন জাগায়। কোমল রোদে শিশিরবিন্দুগুলো মুক্তাদানার মতো ঝলমল করে। পাখির কলরবে আন্দোলিত হয় চারিদিক। সরিষা ক্ষেত এর হলুদ রং রঙিন করে মন।

কুয়াশার ধুম্রজাল এ ঘাট এ বাঁধা নৌকা অল্প দূর এ হলেও দেখা যায় না। কুয়াশায় ঢাকা পথে কুয়াশার চাদর বিদীর্ণ করে হাঁটলে মন শান্ত হয়। শীতকাল এলেই যেন নতুন রঙিন নকশা এর পোশাকে নিজেদের সাজানো শুরু হয়। শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে মাপলার, সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট, টুপি প্রভৃতি রংবেরঙ এর শীতের কাপড় জড়ানো হয়। তবে এতে যুক্ত হয় বিভিন্ন ফ্যাশন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি, পাহাড়ের কোল ঘেষে বেড়ে উঠা দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র প্রকৌশল বিদ্যাপীঠ হলো চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে উঁচু-নীচু টিলার সব সমারোহ হওয়ায় চুয়েটেও এবারের শীত পড়েছে একটু আগেই। কাকডাকা ভোরে বৃক্ষলতায় শিশিরবিন্দু যেন জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমনী সেই বার্তা। আবহমান বাংলার চিরায়ত সব নানান রূপকে প্রকৃতি যেমন ফুটে তুলে আপন করে ঠিক তেমন চুয়েট প্রাঙ্গণে বয়ে চলা শীতল হাওয়া শিক্ষার্থী মনে জাগায় নতুন এক কলতান। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পেরিয়ে বয়ে যাওয়া লেকের পানি কিংবা পদ্মপুকুরের জল সংস্পর্শ করে তেরি হওয়া শিশিরের জমাটে কুয়াশা, যে কারোরই মন জুড়িয়ে দিবে নিমিষে। গোলচত্বর থেকে ২০০ মিটার পেরিয়ে হতাশা চত্বর কিংবা শিক্ষক লেন দিয়ে কেন্দ্রীয় মাঠ সর্বত্র, শীতল, রুক্ষ বাতাস জানান দিবে শীতকাল চলে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈকত দাস বলেন, শীতের সকালে ঠান্ডা হাওয়া, কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে ক্যাম্পাসের পিচঢালা রাস্তাগুলো। পাখির ডাক শোনা যায়, ঘাসে শিশিরের ছোঁয়ায় স্নিগ্ধ এক আবহের অনুভূতি হয় যা স্বর্গীয়।

চুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রাইসাতুল মোকাররমা বলেন, যদি চুয়েটে শীতের দেখা না পেতাম তাহলে হয়তো এতো কষ্ট করে ঘুম থেকে জেগে সিটির পড়া পড়তে পড়তে প্রতিদিন আসতে পারতাম না।

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সামিন ইয়াছার বলেন, ঘন কুয়াশার আড়াল থেকে সকালবেলার সূর্যের মিষ্টি হাসি, শিশির ভেজা ঘাস কিংবা সন্ধ্যায় পথে বের হলে হিমেল হাওয়ার কনকনানি সবুজ স্বর্গ চুয়েটে শীতের আগমনী বার্তার জানান দিচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ