০৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:০২

এক বছরেও ধর্ষণের বিচার পেলেন না বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রী

ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ  © ফাইল ছবি

২০২২ এর ২৩ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের নবীনবাগ এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার নিশ্চিতে ওইদিন রাতেই তৎকালীন প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন । আশ্বাস দেয়া হয়েছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন -২০০০ অনুযায়ীও ১৮০ দিনের মধ্যে মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা। তবে দীর্ঘ এক বছর পার হলেও এখনও মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। ইতোমধ্যে মামালার চার্জশিট ভুক্ত আট আসামীর চারজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

আরো পড়ুন: বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রীক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জন গ্রেপ্তার

বশেমুরবিপ্রবির আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম জুলকদর রহমান বলেন, মোট ৭ জন আসামী জামিনের আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীদের মধ্যে দুইজন ধর্ষণের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ায় এবং ধর্ষণের আলামতে একজনের ডিএনএ পাওয়ায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়নি। এছাড়া, অপর যেই আসামীর ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে তিনি এখনও জামিনের আবেদন করেছেন বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এসময় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে দেরী, মামলা জটসহ বিভিন্নে কারণেই বিচার সম্পন্ন করতে অধিক সময় প্রয়োজন হয় বলেও জানান এই আইনজীবী।

আরো পড়ুন: ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধ

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর এক সহপাঠী বলেন, এ ঘটনা সমগ্র বাংলাদেশকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের দেশে নারীরা কতটা অনিরাপদ। এই ঘটনার জেরে ভুক্তভোগীকে যে ভয়াবহ মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সেটি হয়ত অন্য কারও পক্ষেই উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। আমরা চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে আর কেউ কখনও এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।

এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হবে এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের স্বাভাবিক চলাফেরাও অনিরাপদ হয়ে যাবে।

মামলার বাদী বশেমুরবিপ্রবির সাবেক প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর হিসেবে আমাদের শিক্ষার্থীর সাথে ঘটে যাওয়া অপরাধের বিচার নিশ্চিতে মামলাটি করেছিলাম। নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ল সেল মামালা পরিচালনা সহ মামলার যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যারা দায়িত্বশীল তাদের সহযোগিতা গ্রহণ করবে।

আরো পড়ুন: গ্রেপ্তারকৃতরা ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে: র‌্যাব

বশেমুরবিপ্রবির ল সেলের কর্মকর্তা সাজিদুর রহমান বলেন, আমি অল্প কিছুদিন হলো দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এখনও সকল কাগজপত্র পাইনি। তবে শীঘ্রই মামলাটির বিষয়ে কাজ করবো যাতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হয়। 

বশেমুরবিপ্রবির বর্তমান প্রক্টর ড. মো: কামরুজ্জামান বলেন, আমি ল সেলের কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে কাজ করতে বলেছি। আমাদের শিক্ষার্থীর সাথে যারা এ ধরনের অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।