শাবিপ্রবি প্রশাসনের ‘নিপীড়ন’ থেকে মুক্তি চান স্প্লিন্টারবিদ্ধ সজল

সজল কুন্ডু
সজল কুন্ডু  © টিডিসি ফটো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) প্রশাসনের ‘নিপীড়ন’ থেকে মুক্তি চান স্প্লিন্টারবিদ্ধ সজল কুন্ডু। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। এ বছরের ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার আহত হন সজল।

সজল কুন্ডু বলেন, প্রশাসন আমার সাথে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো তো বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল। আমার চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়া হইছে, আমার রুটিরুজির মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হইছে। আমাকে শারীরিক-মানসিক-অর্থনৈতিকসহ যতভাবে নিষ্পেষণ চালানো যায় তার সব ব্যবস্থাই তারা ( প্রশাসন) করছে। যা হচ্ছে তা আসলেই অন্যায় হচ্ছে। আমি চাই আমার সাথে এ অন্যায়গুলো করা বন্ধ হোক। আমি এই জিনিসগুলো থেকে মুক্তি চাই।

সজল আরও বলেন, আন্দোলনের অংশ না হয়েও এতে গুরুতর হয়ে আইসিইউতে ভর্তি হতে হয় আমাকে। এরপর উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হলেও পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চিকিৎসার ব্যয় বহনের কথা থাকলেও তা না করে প্রশাসন উল্টো আমার কাছ থেকে ‘রুটিরুজির একমাত্র স্থান’ আইআইসিটির ক্যাফেটেরিয়া কেড়ে নিয়েছে।

আরও পড়ুন: বিনামূল্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ 

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ১৬ই জানুয়ারির হামলার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সজল কুন্ডুকে অন্তত ৯ম গ্রেডের একটি চাকরি এবং নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়ার স্পষ্ট আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সজল এখনো শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ বা চাকরি কোনোটাই পাননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তিনি ( সজল) যে ক্যাফেটেরিয়াটি চালাতেন সেটিও কেড়ে নেয়া হয়েছে।

শাবিপ্রবিতে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দেয়া ‘প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও কেড়ে নেয়া কর্মসংস্থান (ক্যাফেটেরিয়া) ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়( শাবিপ্রবি)’র নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এ শিক্ষার্থী। তবে ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের সাড়া মেলেনি।

সজল জানান, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না করায় যেকোনো সময়ে সে মামলায় নিজে ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। তিনি বলেন, আট মাস পেরিয়ে গেল সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ওপর দায়ের করা মামলা তুলে নেয়া হবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। এখনো এগুলো তুলে নেয়া হয় নাই। এখন পর্যন্ত যে মামলা তুলে নেয়া হয় নাই সে মামলায় আমি যে ফেঁসে যাব না তার নিশ্চয়তা কী? আমি মাইর খাইলাম, ক্যাফেটেরিয়া হারাইলাম এখন আবার মামলায় ফেঁসে যাই কি না তা নিয়ে ভয় কাজ করছে।

১১ দিনের অবস্থান কার্যক্রম অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সজলের সাথে যোগাযোগ না করলেও তার সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, আমরা শাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা সজলের দাবিগুলোর সাথে সম্পূর্ণভাবে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তার কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দিয়ে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তার চাকরি ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক।


সর্বশেষ সংবাদ