দুই কারণে ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত গেজেট থেকে বাদ পড়লেন ১৬৮ জন

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। প্রথম গেজেটে ২ হাজার ৬৪ জন সুপারিশ পেলেও সদ্য প্রকাশিত গেজেট থেকে এক হাজার ৮৯৬ জনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়েছেন ১৬৮ জন। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এসব প্রার্থীদের যোগদান করতে বলা হয়েছে।

বিপুল সংখ্যক প্রার্থী বাদ যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। এজন্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে এ প্রতিবেদক। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত দুটি কারণে ১৬৮ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন সূত্র বলছে, পিএসসি নিয়োগের সুপারিশ করে তালিকা পাঠায় জনপ্রশাসনে। এই তালিকা ধরে জনপ্রশাসন পুলিশের কাছ থেকে প্রতিবেদন নেয়। পুলিশ প্রতিবেদনে প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা থাকলে বা নেতিবাচক কিছু পাওয়া গেলে তাঁরা বাদ পড়েন। তবে পুলিশ প্রতিবেদন নেতিবাচক হলে প্রার্থীরা জনপ্রশাসনে আবেদন করতে পারেন। পরে ইতিবাচক প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তারা নিয়োগ পান। অনেকে হাইকোর্টে মামলাও করেন এবং রায় পেলে চাকরি পেয়ে যান।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ‘মামলা এবং এজেন্সি কর্তৃক নেতিবাচক প্রতিবেদনের কারণে ১৬৮ জনকে চূড়ান্ত গেজেট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যারা নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে কারো বিরুদ্ধে মামলা থেকে থাকলে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

এজেন্সি কী ধরনের নেতিবাচক প্রতিবেদন দেয় এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মূলত রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে পুলিশ নেতিবাচক প্রতিবেদন দিয়ে থাকে। ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে হয়তো কেউ কেউ ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেজন্য হয়তো তাদের বাদ দেওয়া হতে পারে।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত গেজেটে বলা হয়েছে, ‘নম্বর পত্রের সুপারিশক্রমে এ প্রজ্ঞাপনের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত ১৮৯৬ (এক হাজার আটশত ছিয়ানব্বই) জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুসারে টাকা ২২০০০-৫৩০৬০/- বেতনক্রমে নিম্নবর্ণিত শর্তে নিয়োগ প্রদান করা হলো।’

নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, ‘তাঁকে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে; উক্ত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সমাপনান্তে তাঁকে তাঁর চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেরূপ স্থির করবে সেরূপ পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে; তাঁকে ০২ (দুই) বছর শিক্ষানবিস হিসাবে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এ শিক্ষানবিসকাল অনূর্ধ্ব দুই বছর বর্ধিত করতে পারবে।শিক্ষানবিসকালে যদি তিনি চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযোগী বলে বিবেচিত হন, তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং সরকারী কর্ম কমিশনের পরামর্শ ব্যতিরেকে তাঁকে চাকরিতে অপসারণ করা যাবে;

উপানুচ্ছেদ (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত প্রশিক্ষণ সাফল্যের সাথে সমাপন, বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং শিক্ষানবিসকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে তাঁকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে; এ প্রজ্ঞাপনে সুনিদিষ্টভাবে ৰাণত হয়নি, গ্রুপ ফেরে তার ঢাকারর বিষয়ে সরকারের প্রচলিত বিধি-বিধান ও আদেশ প্রযোজ্য হবে এবং সরকার কর্তৃক ভবিষ্যতে প্রণীতব্য বিধি-বিধান ও আদেশ অনুসারে তাঁর চাকরি নিয়ন্ত্রিত হবে; The Government Servants (Conduct) Rules, 1979 এর ১৩(১) উপবিধি অনুযায়ী তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন/দখলে থাকা সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণ সম্বলিত একটি ঘোষণাপত্র তাঁকে চাকরিতে যোগদানের সময় সংশ্লিষ্ট ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ১৩ (২) উপবিধি অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর পর পর ডিসেম্বর মাসে প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস/বৃদ্ধির হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।

চাকরিতে যোগদানের জন্য তিনি কোনো ভ্রমণ ভাতা/দৈনিক ভাতা পাবেন না; অনুচ্ছেদ ১ এ উল্লিখিত শর্তাবলী তাঁর নিকট গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে আগামী ০১ মাঘ ১৪৩১/১৫ জানুয়ারি ২০২৫ পূর্বাহ্ণে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত কার্যালয়ে যোগদানের জন্য তাঁকে অনুরোধ করা হলো। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ হতে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা না পেলে উল্লিখিত তারিখেই তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ যোগদান করবেন। নির্ধারিত তারিখে যোগদান না করলে তিনি চাকরিতে যোগদান করতে সম্মত নন মর্মে ধরে নেওয়া হবে এবং এ নিয়োগপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ