স্বাধীনতাবিরোধী ও দণ্ডিত ব্যক্তির নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামকরণ নয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩, ০৪:১৬ PM , আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩, ০৫:৪৪ PM
স্বাধীনতা বিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, রাষ্ট্রদ্রোহী বা দণ্ডিত কোনো ব্যাক্তির নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা নামকরণ করা যাবে না। একই সাথে এখন থেকে কোনো ব্যক্তির নামে নামে স্কুল-কলেজের নামকরণ করতে সরকারে পূর্বানুমতি নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার বেসরকারি স্কুল কলেজ স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির সংশোধিত নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। সংশোধিত নীতিমালা থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোলেমান খান সংশোধিত নীতিমালায় স্বাক্ষর করেছেন।
জানা গেছে, ২০২২ সালে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির চূড়ান্ত অনুমোদনের দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডগুলোকে দিয়ে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক) স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির নীতিমালা ২০২২’ জারি করা হয়েছিল। সেই নীতিমালাটি সংশোধন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশোধিত নীতিমালাতেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির চূড়ান্ত অনুমোদনের দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডগুলোকে দেয়া হয়েছে।
সংশোধিত নীতিমালায় ব্যক্তির নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের খরচ বা জমা রাখা স্থায়ী আমানতের পরিমাণ কমানো হয়েছে। ব্যক্তির নামে নিম্নমাধ্যমিক স্কুল স্থাপন বা নামকরণে আগে ২৫ লাখ টাকা আমানত রাখার বিধান থাকলেও তা কমিয়ে ১৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যক্তির নামে নামকরণে আগে ৩০ লাখ টাকা আমানত রাখার বিধান থাকলেও তা কমিয়ে করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। আর ব্যক্তির নামে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ স্থাপন বা নামকরণে আগে ৫০ লাখ পাকা আমানত জমা রাখার বিধান থাকলেও তা কমিয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।
সংশোধিত নীতিমালা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী, যুদ্ধাপরাধী কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন বা ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত কোনো ব্যক্তির নামে বা সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এমন কোনো নেতিবাচক নামে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা নামকরণের অনুমতি দেয়া যাবে না। নেতিবাচক ও অশোভনীয় কোনো নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা যাবে না। প্রয়োজন মনে করলে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এসব কারণে পরিবর্তন করতে পারে। নামের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যক্তির নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করতে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে। ব্যক্তির নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা নামকরণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির জীবনবৃত্তান্ত, বিশেষ অবদান ইত্যাদি উল্লেখ করে নাম পরিবর্তনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভার কার্যবিবরণীর কপিসহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে আবেদন করতে হবে। শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শন প্রতিবেদন ও জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মত গ্রহণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রতি তিনমাস পর পর মঞ্জুরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ কমিটি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের আবেদন অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করবে।
ব্যক্তি নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নামকরণে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে জমা রাখতে হবে। তবে, সরকার অনুমতি না দিলে স্থায়ী আমানত হিসেবে এ টাকা জমা করা যাবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনে এ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি নিয়ে খরচ করা যাবে।