বেতনের টাকা তুলতেও ভোগান্তি শিক্ষক-কর্মচারীদের, খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন অনেকে

বেতন তুলতে শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘ লাইন
বেতন তুলতে শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘ লাইন  © ভিডিও থেকে সংগৃহীত

বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন তুলতেও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য ব্যাংক খোলা থাকায় অনেকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও বেতন তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়; যে ভিন্ন শাখায় অ্যাকাউন্ট থাকা এবং ১৫ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করতে না পারায় অনেকেই বেতন না তুলেই বাড়ি ফিরেছেন অনেকে।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক খোলা রাখা হয়েছিল। এ সময় বেতন তুলতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

দিনাজপুরের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম দস্তগির জানান, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা তুলতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। রোজা রেখে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তবে বেতন তুলতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েও বেতন তুলতে পারেননি। তাদের কথা ভেবে কষ্ট হচ্ছে। এভাবে হয়রানি বন্ধ করা দরকার। ব্যাংক যখন খোলাই রাখা হয়েছে, তখন একটু বেশি সময় খোলা থাকলে সবারই সুবিধা হত।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান জানান, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের টাকা তুলতে পেরেছি। তবে অনেক শিক্ষক বেতন তুলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাকাউন্ট না হওয়ায় তাদের চলে যেতে হয়েছে। বিষয়টি ঠিক হয়নি। বেসরকারি শিক্ষকদের ভোগান্তি কমাতে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বেতন তুলতে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভোগান্তি হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।

দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে ডিসেম্বর মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা জানুয়ারি মাসের বেতনও পেয়েছেন। তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা গতকাল তুলতে পেরেছেন।

অন্যদিকে ৫ম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে দুই মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়েছে। তারও গতকাল ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ