বেতন বন্ধ ১১ মাস, ঈদ আনন্দ নেই শতাধিক প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের

মাউশি লোগো
মাউশি লোগো  © ফাইল ছবি

টানা ১১ মাস ধরে বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে শতাধিক প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের। ইনডেক্স ট্রান্সফার এবং ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটি জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না তারা। এমনকি গতকাল বৃহস্পতিবারও তাদের বেতন ছাড় হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রী, সন্তান ও পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ফলে ঈদের আনন্দ নেই তাদের পরিবারে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হন। এর পর তারা পূর্বের ইনডেক্স বাতিলের জন্য আবেদন করেন। অনেকে আবার ইনডেক্স ট্রান্সফারের আবেদন করেন। এ আবেদন যাচাই-বাছাই করতেই ৮ মাস অতিবাহিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নতুন ইনডেক্স নম্বর পেলেও ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির জটিলতায় বেতন তুলতে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। যদিও জানুয়ারি ইনডেক্স পাওয়া ৩ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে গতকাল বেতন-ভাতা পেয়েছেন।

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজির পাগলা অভয়  তালুকদার ইনস্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহমুদ আলী খান বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ ১৫ মাস, কেউ বা ১১ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। আমরা একাধিকবার মাউশিতে যোগাযোগ করলেও তারা কেবল আশার বানী শুনিয়ে যাচ্ছে। কোনো প্রতিকার বের করতে পারছে না। এভাবে দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় আমাদের অনেকেই মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ মার্চ মাসের বেতন পাচ্ছেন। আর আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছি না। এটা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করছে। জুলাই আন্দোলনের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান কুসুমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গত বছরের ১৪ মার্চ সালে নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করি। যোগদানের পর এপ্রিলে পূর্বের প্রতিষ্ঠানের ইনডেক্স কর্তনের জন্য আবেদন করলেও জুন মাসে সেটি কার্যকর হয়। এরপর আগস্ট এমপিওর জন্য আবেদন করলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ইনডেক্স হয়। এরপর ইএফটির কাজ শুরু হলে আবার বেতন পাওয়া নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সব মিলিয়ে ১১ মাস ধরে বেতনহীন অবস্থায় রয়েছি।  আমাদের ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছি।

আমিনুল ইসলাম নামে আরেক সহকারী প্রধান শিক্ষক বলেন, ইএফটি জটিলতায় প্রায় এক বছর ধরে বেতন পাচ্ছি না। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। ভোগান্তি কমানোর কথা বলে বেসরকারি শিক্ষকদের ইএফটিতে বেতন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ইএফটির কারণে ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বেতন ছাড়া পরিবার নিয়ে আমরা কীভাবে দিন পার করছি তা আল্লাহই ভালো জানেন।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, ইএফটিতে কিছু কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেকের বেতন পেতে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ইএমআইএস সেল সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে। আশা করছি ঈদের পর তারা বেতন-ভাতা পাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ