দেড় লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য সংশোধন করতে হবে দুই মাসের মধ্যে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৯ AM , আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ AM

ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে বেতন পেতে যাওয়া দেড় লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর ভুল তথ্যগুলো আগামী দুই মাসের মধ্যে সংশোধন করতে হবে। এ সময়সীমার মধ্যে তথ্য সংশোধন না হলে সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া স্থগিত করা হতে পারে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বা ইএমআইএস সেল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে মাউশির ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট উইংয়ের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মজুমদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে ইএফটিতে বেতন পেতে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ইএমআইএস সেলে থাকা অনেক তথ্যের মিল নেই। কারো নামের বানানে ভুল রয়েছে। আবার কারো জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ঠিক নেই। এগুলো সংশোধনের জন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের দুই মাসের সময় দেওয়া হয়েছে।’
দুই মাসের মধ্যে তথ্য সংশোধন না করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাউশির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম হওয়ার পর বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
ইএমআইএস সেল সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রায় ৪ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে ইএফটিতে বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার তথ্য যাচাই করা হয়েছে। যাচাইয়ের পর প্রথম ধাপে এক লাখ ৮৯ হাজার জন ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাদের ব্যাংকে টাকা জমা হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে মাউশির উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মজুমদার, ‘৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকে পাঠানো হতে পারে। কোনো কারণে আজ সম্ভব না হলে আগামী সপ্তাহের শুরুতেই ব্যাংকে টাকা পাঠানো হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় ৮৪ হাজার জনকে ইএফটির মাধ্যমে বেতন দেওয়া হবে।’
তাদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ প্রক্রিয়া শেষে প্রার্থীদের তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর অর্থ ছাড়ের জন্য চিফ অ্যাকাইন্টেন্ট এর কাছে পাঠানো হবে। এরপর ব্যাংকে টাকা যাবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।’
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
আরো পড়ুন: মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ ৮০ জনের সনদে ত্রুটি পেয়েছে অধিদপ্তর
ব্যাংকগুলো মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবরের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতনের মেসেজ পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতনের মেসেজ পাঠানো হচ্ছে।