জাল সনদ দিয়ে ৯ বছর ধরে চাকরি, নীরব প্রশাসন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:৫৩ PM , আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:১৬ PM
বিপিএড সনদ জাল করে প্রায় ৯ বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মহীপুর মাওলানা ভাসানী উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান রিপনের বিরুদ্ধে। তবে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিপিএড ডিগ্রি অর্জন করেন আসাদুজ্জামান। ওই সনদ দিয়ে একই বছর এমপিওভুক্ত হন (ইনডেক্স নাম্বার N১১১৭৪৩১)। তবে আসাদুজ্জামানের সনদ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে সনদ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বিষয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। সনদ যাচাইয়ে আসাদুজ্জামানের বিপিএড সনদটি জাল বলে জানায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
২০২২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আমীর খইয়াম স্বাক্ষরিত সনদ যাচাই সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ‘মোঃ আসাদুজ্জামান এর সাময়িক সনদপত্র যার রোল নম্বর-২৬৭০৩, রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ৬০১৪২১, শিক্ষাবর্ষ-২০০২-২০০৩, বিপিএড পরীক্ষা-২০০৩, ফলাফল- দ্বিতীয় শ্রেণি। উল্লেখিত সাময়িক সনদপত্রটি যাচাইয়ান্তে প্রতীয়মান হয় যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অনুযায়ী সনদের তথ্য সঠিক নয় এবং এটি একটি জাল সনদপত্র।’
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আসাদুজ্জামানের সনদ জালের বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানলেও তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ার দোহাই দিয়ে তাকে চাকরিতে রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। এছাড়া উপজেলা এবং জেলা শিক্ষা অফিসেও প্রভাব বিস্তার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহীপুর মাওলানা ভাসানী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসাদুজ্জামানের সনদ জালের বিষয়টি সকলেই জানে। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। টাকার জোরে তিনি বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে এখনো ক্লাস নিচ্ছেন।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না জানিয়ে আসাদুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি আমি পাইনি। তাই এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না।’
এ বিষয়ের মহীপুর মাওলানা ভাসানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসাদুজ্জামানের সনদ জালের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো: আমান উদ্দিন মন্ডল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসাদুজ্জামানের সনদ জালের অভিযোগ পাওয়ার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে তারা এখনো চিঠির জবাব দেয়নি। চিঠির জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।
জাল সনদ দিয়ে চাকরি করার সুযোগ নেই জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসাদুজ্জামানের বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগের ফাইল দেখে আপনাকে জানাতে পারব।’