ঢাবির বৈশাখী কনসার্ট কি বাতিল নাকি হবে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৩৮ AM , আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৩৭ PM
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী আয়োজিত কনসার্ট মঞ্চে হামলার পর অনুষ্ঠানটি বাতিলের গুঞ্জন উঠেছে। কনসার্টে ‘অংশ নেওয়া না নেওয়া’র দোলাচলে ইতোমধ্যেই নিজেদের সব মালামাল গুছিয়ে নিয়েছে আয়োজনের প্রধান স্পন্সর মোজো। আজ সকালে নিরাপত্তার খাতিরে ব্যানার-ফেস্টুনসহ সংক্রান্ত সবকিছু নিয়ে যান তারা। যদিও কনসার্ট না হওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছে আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তারা বলছেন, এটা ছাত্রদের অনুষ্ঠান। কোনোভাবেই বাতিল হবে না।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কনসার্ট হবে কি হবে না- এ ব্যাপারে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে না। ছাত্ররা সমঝোতা করে কনসার্ট করতে পারে। তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
আর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনাটি তিনি এখনো পুরোপুরি জানেন না। প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে কনসার্ট করা না করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। দোষীদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগ নেতা আসিফ তালুকদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, কনসার্ট হবে, একটু ভীতি সৃষ্টি হওয়ায় মজো কোম্পানী তাদের জিনসপত্র গুছিয়ে রেখেছেন। অন্য কিছু না। তিনি বলেন, এটা সকল শিক্ষার্থীর অনুষ্ঠান, বাতিল হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয় দফায় আগুন সকালে
এদিকে রাতে আগুন দেওয়ার পর কনসার্ট আয়োজকদের পক্ষ থেকে যখন ফের সবকিছু ঠিকঠাক করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল; তখন দ্বিতীয় দফায় আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বাইক নিয়ে এসে পেট্রল ঢেলে ফিল্মি স্টাইলে আগুন দেয় তারা। পরে উপস্থিত সকলে তা নিভিয়ে ফেলে।
তথ্যমতে, লোকসঙ্গীত ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত ওই কনসার্টস্থলে শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরীর কর্মীরা ভাংচুর ও আগুন দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, কনসার্ট নিয়ে মতানৈক্য করেছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি। তিনি চেয়েছিলেন কনসার্ট যাতে না হয়। এ কারণেই তার নির্দেশে অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহায়তায় ওই কনসার্ট আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল।
ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে অভিযোগ করে বলেন, এখানে (মল চত্ত্বর) যারা ছিল; তাদের সবাই দেখেছে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভনের কর্মীরা ওই কাজ করছে। তার (শোভন) নির্দেশেই এটা করা হয়েছে। সনজিত আরো বলেন, যারা পহেলা বৈশাখের কনসার্টে বাধা দেয়; তারা অন্তত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিচার দাবি করেন তিনি।
ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত ১৩ ও ১৪ এপ্রিলের অনুষ্ঠান যেন সুন্দরভাবে হয়; সেজন্য আমরা কাজ করব।
ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, যারাই এ কাজ করেছে; তাদের বিচার করা হবে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করতে হবে।
তবে অনুসরাীদের হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ঘটনার পর জানতে পেরেছি। যারা প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত; হয়তো তাদের সঙ্গে বহিরাগতদের কোন সমস্যার কারণে এই ভাঙচুর হতে পারে তিনি মরেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানো হচ্ছে। সামনে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি দিব। তার দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কেন্দ্রের তো একটি সমস্যা আগে থেকেই আছে। অন্যদিকে, ডাকসুর সাথে ছাত্রলীগের মোড় তৈরি করে আমাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ডাকসু ও ছাত্রলীগের মনমালিন্যের কারণে এই বিষয়টা রাজনৈতিক ইস্যু বানানো হচ্ছে।
পড়ুন:সফলতার গল্প: কাঁধে হাত রেখে বাবা বলেছিলেন, এএসপি তোকে হতেই হবে