মৃত্যুর আগে ছেলেকে ফোন দেন শিক্ষক খায়রুন, যা বলেছিলেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২২, ০৯:৪৫ AM , আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২২, ০৯:৪৫ AM
গুরুদাসপুর এম হক কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার (৪০) শেষবারের মতো কথা বলেছিলেন ছেলে সালমান নাফিস বৃন্ত। ৪০ সেকেন্ডের কথোপকথনে তিনি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার কথা জানান। ছেলে বিষয়টি সৎবাবা মামুন হোসাইনকে (২২) বলেন। ঘটনার দিন রাত ১১টার আগে মাকে ফোন দেন। গত রোববার নাটোরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ সময় মা বৃন্তকে জানান, তিনি আটটি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। এর বাইরে আর কথা বলতে পারেননি। এরপর সংযোগ কেটে মামুনকে ফোন দেন। এ সময় মামুন বৃন্তকে বলেন, দুই-চারটা কথা হলেই ঘুমের ট্যাবলেট খায় খায়রুন। পরদিন সকালে মামুন তাকে ফোন দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি জানান।
ছেলের দাবি, মামুন যে কথা বলেছেন তা মিথ্যা। মূলত মায়ের কাছ থেকে মোটরসাইকেল কেনাসহ সব কাজের জন্য টাকা নিতেন মামুন। সবসময় মাকে চাপে রাখতেন। মা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিতে চাইলে মামুন নিষেধ করেন। এ নিয়ে রাতে মায়ের সঙ্গে মামুনের ঝামেলা হয়। মামুন হয় হত্যা করেছেন অথবা আত্মহত্যায় উৎসাহ দিয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক পরিতোষ কুমার বলেন, সদর হাসপাতালের আরএমও সামিউল ইসলাম শান্তর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করা হয় খায়রুনের ময়নাতদন্তে। তার গলা ছাড়া শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।
আরো পড়ুন: ঘুরতে গিয়ে ডাকাতের কবলে ঢাবির ১২ শিক্ষার্থী
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এ জে মিন্টু বলেন, ওই শিক্ষিকার মৃত্যুর সঙ্গে মামুন জড়িত বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। খায়রুনের মৃত্যুর সঙ্গে মামুনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে ধারণা থেকে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জানান, খায়রুনের সঙ্গে মামুনের স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছেন। কিন্তু কী কারণে খায়রুন মারা গেলেন তা মামুন জানেন না। আদালতে বিষয়গুলো তুলে ধরে জামিন চাইলেও বিচারক নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সিআইডির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ছায়া তদন্ত করেছে পিবিআই। জেলা পুলিশ ও র্যাব কাজ করেছে। ময়নাতদন্তসহ কয়েকটি তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা তদন্তের পর জানা যাবে।