নিউমার্কেটে সংঘর্ষ নিয়ে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট এলাকা
সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট এলাকা  © টিডিসি ফটো

রাজধানীর নিউমার্কেটে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে দুই পক্ষ। শিক্ষার্থীরা বলছেন, কথাকাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, একটি দোকানে কয়েকজন খেয়ে বিল না দেওয়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়।

কয়েকজন শিক্ষার্থীর দাবি, এদিন রাতে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে যান ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

অপরদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র রাতে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে খাবার খান। তবে টাকা না দিয়েই তারা চলে যাচ্ছিলেন। এ নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় দোকানের লোকজনের। এরপরই ঢাকা কলেজের ছাত্ররা দোকান ভাঙচুর করেন। পরে ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে বের হন বলে দাবি তাদের।

গুলিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।

আহত দুই ছাত্র হলেন রজব ইসলাম (২৭) ও মোশাররফ হাজারি (২৪)। এর মধ্যে মোশাররফের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরে অসংখ্য রাবার বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চিকিৎসক আইসিইউতে নিতে বলেছেন বলে জানান এক শিক্ষার্থী।

ঢাকা কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ বলেন, ‘পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে মোশাররফ গুলিবিদ্ধ হন। অন্যদিকে একটি টিয়ার শেল রজবের বুকে লাগে।’

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁদড়র ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে। দুই ব্যবসায়ীও আহত হয়েছেন।

আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীদের দমাতেই ১০০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ

সংঘর্ষের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান নিউমার্কেটের চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিউমার্কেটে ব্যবসায়ীদের সাথে তিন শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটির জের ধরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। শুরুতে স্থানীয় থানা পুলিশ এবং কন্ট্রোল রুমের অতিরিক্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে আরও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।’

সবমিলিয়ে ১০০ রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে অসংখ্য শিক্ষার্থী পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন, এমন দাবীকে অসাড় আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে পুলিশ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।


সর্বশেষ সংবাদ