তারা দিনের বেলায় ছাত্রনেতা, রাতে হয়ে যায় ছিনতাইকারী

দিনে ছাত্রনেতা রাতে ছিনতাইকারী
দিনে ছাত্রনেতা রাতে ছিনতাইকারী  © সংগৃহীত

দিনের বেলায় নিজেকে ছাত্রনেতা পরিচয় দিয়ে রাতে ছিনতাই কাজে জড়িত। বিভিন্ন দিবসে নিজেদের ক্ষমতাশীন দলের ছাত্রসংগঠনের পরিচয় দিয়ে শীর্ষ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতার ছবি দিয়ে বড় বড় ব্যানার ও বিলবোর্ড লাগায় তারা। সংগঠনের নামে করোনাকালীন অনেকে ত্রাণ বিতরণ করে মানবিকও সেজেছেন। তবে দিনে মানবিক হলেও রাতে তারা হয়ে ওঠেন ভয়ংকর। করেন মোটরসাইকেল ছিনতাইসহ নানান অপকর্ম।  

এই চক্রের সাতজন সদস্য গ্রেপ্তারের পর সিলেট জেলাজুড়েই তাদের নেটওয়ার্ক রয়েছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে । এই তথ্যের ভিত্তিতে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট শনাক্ত ও তাদের ধরতে কয়েক দিন ধরে মাঠে নামে সিলেট জেলা পুলিশ।

গত সোম ও মঙ্গলবার জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে ওই সিন্ডিকেটের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় দুটি চোরাই মোটরসাইকেল। গ্রেফতারকৃতরা হলো- কোম্পানীগঞ্জ থানার দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের সজল আহমদ, শাহপরান থানার ইসলামপুরের খায়রুল ইসলাম রায়হান, একই থানার সুরমা গেটের আল আমিন হোসেন শিমুল, একই এলাকার জিহাদ, কানাইঘাট উপজেলার ঢালাইরচরের আলী হোসেন জনি, একই উপজেলার শিবনগরের মারুফ আহমদ ও শ্রীপুরের দেলোয়ার হোসেন দুলাল। এর মধ্যে খায়রুল ইসলাম রায়হান, সজল আহমদ ও আল আমিন হোসেন শিমুল সিলেট জেলা ছাত্রলীগ নেতা।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাশীন ছাত্রসংগঠনের কমিটি না থাকায় তারা নিজেদেরকে নেতা পরিচয় দিয়ে দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আসছে। পুলিশ জানায়, সজলের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় ছিনতাই ও দ্রুত বিচার আইনসহ ৮টি মামলা রয়েছে। রায়হানের বিরুদ্ধে শাহপরাণ থানায় দ্রুতবিচার আইনে দুটি ও একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। দুলালের বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট ও হত্যাচেষ্টাসহ চারটি মামলা রয়েছে।

সিলেট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান জানান, গত ১০ মে সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জের দয়ারবাজার থেকে একটি মোটরসাইকেল বুড়িডহর এলাকায় যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের সামনে আসার পর যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীর দুই সহযোগী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। মোটরসাইকেল চালক কোম্পানীগঞ্জের কালিবাড়ি গ্রামের বিলাল আহমদকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে জেলাজুড়ে বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ। এই অভিযানে গ্রেফতার করা হয় মোটরসাইকেল ছিনতাই চক্রের সাত সদস্যকে।  কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি কে এম নজরুল জানান, গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীদের একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। এর মধ্যে সজল ও রুবেলসহ আরও দুই-তিনজন সরাসরি মোটরসাইকেল ছিনতাই করত। বাকিদের কেউ চোরাই মোটরসাইকেল নিজেদের হেফাজতে রাখত। আবার কেউ বিক্রির কাজে সহায়তা করত। কোম্পানীগঞ্জ ছাড়াও তারা সিলেট নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

আরও দেখুন: সভাপতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা


সর্বশেষ সংবাদ