ঘটনা ৩২ দিন আগের, ‘অনৈতিক’ কাজের দোহাই দিয়ে নির্যাতন!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২০, ১২:১৬ AM , আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০, ০১:১৪ AM
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক। মোবাইল ফোনে সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তারা। এক মাসেরও বেশি সময় আগে তথা গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের পর গৃহবধূ ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় একজন জানায়, ওই গৃহবধূর বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকে। দীর্ঘদিন স্বামীর কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার লোকজন নিয়ে রাত ১০টার দিকে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে ‘অনৈতিক’ কাজের অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।
ওই নারীর এক প্রতিবেশী জানান, মূলত ‘অনৈতিক কাজের অপবাধ’ দিয়ে নির্যাতন করায় আমরা কেউ কথা বলতে পারিনি। তাছাড়া প্রভাবশালী দেলোয়ারের ভয়ও ছিল।
জানা যায়, একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক নারী দাম্পত্য কলহের জেরে কয়েক মাস বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে স্থানীয় যুবক আব্দুর রহিমসহ কয়েকজন তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে এবং অশালীন প্রস্তাব দেয়। মূলত সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণেই নির্যাতনের সুযোগ খুঁজছিল।
এদিকে ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার দুপুরে নির্যাতনের ওই ভিডিও কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও তৎপর হয়ে ওঠে। পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বাদল এবং কর্মী রহিম, সুমনসহ পাঁচ-ছয়জন গৃহবধূর সঙ্গে এমন বর্বর আচরণ করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় আবদুর রহিম নামের একজনকে আটক করা হয়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, নির্যাতনকারী দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তার নাম আবদুর রহিম। সে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শেখ আহমেদ দুলালের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
পড়ুন: ‘আমি ভাগ্যবান, নোয়াখালীর ভিডিওটি আমাকে দেখতে হয়নি’
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যতই ক্ষমতাধর হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।