‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মাদ্রাসা শিক্ষককে ট্রেন থেকে ধাক্কা!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৯, ০৭:১৬ PM , আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯, ০৭:১৬ PM
এবার কলকাকতায় ‘জয় শ্রীরাম' স্লোগান না দেয়ায় এক মুসলিম তরুণকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি টানা দ্বিতীয়বারের সরকার গঠনের পর দেশটিতে মুসলমানদের জোরপূর্বক ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেয়ানোর ঘটনা বেড়েই চলছে।
আনন্দবাজারপত্রিকার খবরে বলা হয়, শাহরুফ হালদার নামে নির্যাতিত ওই তরুণ একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। রমজানের ছুটি কাটিয়ে গত ২০ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে মাদ্রাসার কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ক্যানিং স্টেশন থেকে শিয়ালদাহমুখী ট্রেনে ওঠেছিলেন।
মঙ্গলবার ওই যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, সেদিন ক্যানিং এবং তালদি স্টেশন থেকে পুরো ট্রেনেই হিন্দু সংহতির বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক উঠেছিলেন।
‘ট্রেন বেশ কয়েকটা স্টেশন পেরোতেই চিৎকার-চেঁচামেচি কানে আসতে থাকে। বোঝা যাচ্ছিল-পাশের কামরায় কোনও কিছু নিয়ে গণ্ডগোল হচ্ছে। তবে কী নিয়ে প্রথমে তা কিছু বুঝতে পারিনি।’
তার অভিযোগ, হিন্দু সংহতির কয়েকজন আমাকে গালাগাল করা শুরু করে। প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করে। ওরা ১০-১৫ জন ঘিরে ধরে আমাকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয়ার জন্য জোর করতে থাকে।
শাহরুফের দাবি, তিনি স্লোগান দিতে চাননি। ফলে মারধর আরও বেড়ে যায়। তিনি কোনও রকমে পার্ক সার্কাস স্টেশনে নেমে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাকে ট্রেনের কামরাতেই আটকে রাখা হয়। তারপরে ধাক্কা মেরে প্ল্যাটফর্মে ফেলে দেয়া হয়।
খবরে বলা হয়েছে, রেল পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার নেপথ্যে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে অস্বীকার করা, নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে তদন্তকারীদের।
এদিকে চলতি সপ্তাহেই ঝাড়খণ্ডে সামস তেবরেজ (২৪) নামে এক মুসলিম যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে সাত ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্র মৌলবাদী হিন্দুরা। এ সময় তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করা হয়।
ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের কোনো ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট প্রকাশের মধ্যেই এ ঘটনাগুলো ঘটছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ২০১৮ সালেও ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষত মুসলমানদের ওপরে হিন্দুত্ববাদী চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলির হিংসাত্মক আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।