ঢাবিতে খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে হলের দেয়াল ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

ভেঙে ফেলা দেওয়াল আবার মেরামত করা হয়েছে
ভেঙে ফেলা দেওয়াল আবার মেরামত করা হয়েছে  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের মাঠের পার্শ্ববর্তী স্যার এ এফ রহমান হলের অবস্থান। এ দু হলকে বিভক্তকারী দেয়ালের একাংশ ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। মুহসীন হলের মাঠে খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে দেয়াল ভেঙে ফেলা হয় বলে জানা গেছে। 

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মুহসীন হল মাঠ ও স্যার এ এফ রহমান হলকে বিভক্তকারী এই দেয়ালটির উত্তর পার্শ্বের একাংশ ভেঙে ফেলা হয় এবং পরে তা মেরামত করেও দেওয়া হয়।

জানা যায়, ঐদিন বিকেলে মুহসীন হলের মাঠে এ এফ রহমান হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্রিকেট খেলার সময় নিজেদের টুর্নামেন্ট শুরু করতে ওভার কমাতে বলে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দেয়ালের একাংশ ভেঙে ফেলেন এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা। পরে দুই হলের প্রাধ্যক্ষ আলোচনায় বসেন এবং এফ রহমান হলের পক্ষ থেকে ভাঙা দেয়াল রাতেই মেরামত করে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল আমাদের হলের মাঠে এ এফ রহমান হলের প্রথম বর্ষের কিছু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল। আমাদের হলের প্রথম বর্ষের বিভিন্ন গ্রুপের শিক্ষার্থীদেরও আনুষ্ঠানিক একটা টুর্নামেন্ট ছিল। ওরা গিয়ে তাদের ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেছিল যে, আমাদের আনুষ্ঠানিক একটা টুর্নামেন্ট আছে, তোমরা তোমাদের ওভার একটু কমিয়ে খেলাটা সংক্ষেপ করলে ভালো হতো। এককথায় তারাও ওভার কমিতে খেলতে রাজি হয়। কিন্তু, পরে তা ভঙ্গ করে এবং নিজেদের মতো করে ওভার বাড়িয়েই খেলতে থাকে। তখন মুহসীন হলে শিক্ষার্থীরা এটার প্রতিবাদ করলে তারা উগ্র আচরণ করতে থাকে। এরপর উভয়পক্ষের মাঝে একটু কথাকাটাকাটি হয়। পরে উভয় হল থেকেই সিনিয়র শিক্ষার্থীরা গেলে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়। পরে শুনি যে, তারা আমাদের হল মাঠের দেয়াল ভেঙে ফেলেছে।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং তারা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন 

এ প্রসঙ্গে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, খেলার মাঠে আমাদের হলের শিক্ষার্থীদের সাথে স্যার এ এফ রহমান হলের কিছু শিক্ষার্থীর কথাবার্তা হয়েছে। এই ঘটনা আমি শোনার পর আমাদের ছাত্ররা যেন হলের ভেতরেই থাকে এবং আর কোনো ঝামেলা যেন না হয়, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে সন্ধ্যায় শুনতে পাই যে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ এবং এ এফ রহমান হলের মধ্যকার দেয়ালের ওপরের কিছু অংশ ওই হলের শিক্ষার্থীরা ভেঙে ফেলেছে। এটা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি উক্ত হলের প্রাধ্যক্ষ মহোদয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মহোয়ের সঙ্গে কথা বলেছি।

স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের হলের কিছু শিক্ষার্থী মাঠে খেলতে গিয়েছিল। ছয় ওভার বাকি থাকতেই মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা নাকি তাদের স্ট্যাম্প তুলে দেয় এবং খেলতে দেয়নি। এরপর দুই হল থেকে সিনিয়র ছাত্ররা যায় এবং আলাপ আলোচনা হয়। খেলা শেষ করতে না দেওয়ায় অপমানিত বোধ করায় শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে যে, আমাদের খেলার মাঠ তাহলে কোথায়? আমরা কোথায় খেলব? এখানে আমরা খেলতে পারব না কেন? এটা ভেবে একটু রাগান্বিত হয়ে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ খেলার মাঠ এবং আমাদের হলের মধ্যবর্তী স্থানের দেয়ালটির একটা অংশ ভেঙেছিল। পরে এটা আমরা জানার পর দুই হল প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আপাতত ভেঙে ফেলা অংশটুকু মেরামত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ