০৪ জুন ২০২৫, ২০:০১

সন্ধ্যায় জেল থেকে মুক্ত হয়ে রাতেই ডাকাতি

পুলিশের কাছে গ্রেফতার ৩ জন  © পুলিশ সূত্রে পাওয়া

সন্ধ্যায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। পরনের জামাকাপড়ও হয়তো তখনো বদলাননি। আর রাত নামতেই ছুটে গিয়েছিলেন পুরোনো পথে—ডাকাতির মিশনে। তবে পরিকল্পনা মতো কিছুই হলো না। পথেই পুলিশের চেকপোস্টে ধরা পড়লেন, হাতে ধরা রিভলভার তাক করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে। শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে আবারও ফিরতে হলো পুলিশ হেফাজতে।

আজ বুধবার (৪ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার করা হয়েছে ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রের তিন সদস্যকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি রিভলভার ও দুই রাউন্ড গুলি।

আরও পড়ুন: নারীকে লাথি মারা বহিষ্কৃত সেই জামায়াতকর্মীর জামিন

গ্রেফতার তিনজন হলেন—কুমিল্লা নগরীর শ্রীবল্লভপুর এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে খাইরুল হাসান (৩০), সদর উপজেলার বাহরূপা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল হাসান রিয়াদ (২৮) এবং চাঁদপুরের মতলব উত্তরের নয়াকান্দি এলাকার রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে সোহাগ মোল্লা (৩৫)। তাদের মধ্যে রিয়াদ ও সোহাগ ওইদিন সন্ধ্যায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। খাইরুল জামিনে বের হয়েছেন এক মাস আগে।

পুলিশ জানায়, এই তিনজনের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মামলা। খাইরুল হাসান একাই ৪০টি মামলার আসামি। রিয়াদের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৬টি এবং সোহাগের নামে রয়েছে ১৪টি মামলা—যার মধ্যে রয়েছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ।

পুলিশ সুপার জানান, ঈদুল আজহা সামনে রেখে জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। চেকপোস্ট বসানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। এরই অংশ হিসেবে সদর দক্ষিণ থানার ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) খাজু মিয়া মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে টহলে ছিলেন। কুমিল্লার কান্দিরপাড় থেকে পদুয়ার বাজারের দিকে যাচ্ছিল একটি সিএনজি অটোরিকশা। তাতে থাকা তিনজন যুবককে সন্দেহ হলে থামিয়ে তল্লাশি শুরু করেন তিনি।

আরও পড়ুন: চেঙ্গী নদীতে নিখোঁজ কিশোরের সন্ধান মেলেনি আজও

এ সময় যুবকরা আচমকা রিভলভার বের করে গুলি চালাতে উদ্যত হলে পুলিশ দ্রুত ঘিরে ফেলে তাদের। সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকলেও পুলিশ কৌশলে তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় একটি রিভলভার ও দুই রাউন্ড গুলি।

জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানান, কুমিল্লার বিভিন্ন পশুর হাটে গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের টার্গেট করে ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের। বিশেষ করে হাট থেকে বের হওয়ার সময় টাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল থাকায় সে সময়টাকেই বেছে নিয়েছিলেন তারা। ওই রাতে ছিল তাদের প্রথম অভিযান—যা শুরু হওয়ার আগেই থেমে গেল পুলিশের তৎপরতায়।তবে তাদের সঙ্গী সিএনজি চালক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।