প্রেম রাজি না হওয়ায় তুলে নিয়ে ধর্ষণ-নির্যাতন, মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু

  © প্রতীকী ছবি

প্রেমে রাজি না হওয়ায় ময়মনসিংহের নান্দাইলে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনে অসুস্থ মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

ছাত্রীটির বাবা বলেন, আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার মেয়েকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেন চিকিৎসকরা। ১৫ দিন চিকিৎসা শেষে মেয়ের ডান চোখ বাঁচাতে কর্ণিয়া তুলে ফেলা হয়। সেই কর্ণিয়া স্বজনরা ফ্রিজের মধ্যে রেখে দেন পরে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিস্থাপনের জন্য। এ অবস্থায় তারা তাদের মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন। সোমবার দুপুরে মেয়েটি মারা যায়।

মেয়েটির বাবা আরও জানান, আমার মেয়েটিকে নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। হোসাইনকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

এরআগে, অপহরণের পর ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গত ৯ সেপ্টেম্বর মেয়েটির বাবা ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা করেন। এলাকাবাসী মোহাম্মদ হোসাইন (২২) নামে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। নিহতের বাবার করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেন উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের কচুরি গ্রামের মোহাম্মদ হোসাইন। কিন্তু হোসাইনের প্রস্তাবে রাজি না হলে গত ১ জুন ১৪ বছর বয়সি মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, দুই মাস নারায়ণগঞ্জের একটি এলাকায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে ডান চোখ ক্ষত করে দেওয়ার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে বাড়ির পাশের সড়কে ফেলে যায় অপহরণকারী।

এই বিষয়ে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনাটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মত নয়। একটি মেয়েকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। তবু্ও প্রশাসনের কোনো সোচ্চার ভূমিকা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেন, কী জন্য? আমরা চাই, দ্রুত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

নান্দাইল মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, ছাত্রীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আগে যে মামলাটি হয়েছিল সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হলে সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক মোসলেম উদ্দিন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, মেয়েটির বাবা আদালতে নালিশি মামলা করেছেন। আদালত থেকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আমরা তদন্তের জন্য হাসপাতালে মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছিলাম। রিপোর্ট পেলেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।


সর্বশেষ সংবাদ