সুষ্ময়ে বিব্রত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ!

সাবরুন জামিল সুষ্ময়
সাবরুন জামিল সুষ্ময়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুন জামিল সুষ্ময়। আম বাগান চুরি, বাস চালককে মারধর, পরিবহন প্রশাসককে লাঞ্চনা, শিক্ষার্থীকে মারধর— সব অভিযোগই রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানো, বৃদ্ধা নারীকে দোকান করে দেওয়া, জিম্মি করে নেওয়া মুক্তিপণ উদ্ধার করে দেওয়া, শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অর্থ সহায়তা প্রদানসহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইতিবাচক কার্যক্রমের চেষ্টা করছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ও সহ-সভাপতি এহসান মাহফুজসহ অন্য নেতারা। তবে সুষ্মময় নামের ওই নেতার অপরাধমূলক কার্যক্রমের কারণে রীতিমত বিব্রত শাখা ছাত্রলীগের নেতারা।

ছাত্রলীগের এই নেতার অভিযোগগুলোর সাথে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককের মারধর। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে ভিসি বরাবর এ অভিযোগ দেওয়া হয়।

এর আগে গত শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বাণিজ্যিক দহন সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধের দাবিতে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে প্রতিবাদ করছিল ছাত্রজোট ও সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুল জামিল সুষ্ময় ইচ্ছাকৃতভাবে হৃদয়ের কোমরে সজোরে লাথি মারে। গুরতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় চারুকলার এক শিক্ষার্থীর হাতও ভেঙ্গে যায় ছাত্রলীগের মারধরে।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাস চালককে মারধর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী বাস চালকের নাম আব্দুল গনি।

অভিযোগ আছে লিচু কেলেঙ্কারিরও। জানা যায়, ২৮ এপ্রিল দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে লিচু পাড়ার অভিযোগে মারধর করা হয়। ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় রাকসু ভবনের সামনের একটি গাছ থেকে ৩টি লিচু ছিঁড়েন এক শিক্ষার্থী। এ কারণে ৩টি লিচুর মূল্যস্বরূপ ২৪ টাকা আদায় করেন ওই ছাত্রলীগ নেতারা।

৭ জুন রাতে টেন্ডার ছাড়াই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তিন নেতার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের আম ও লিচু বাগান দখলে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাবি ছাত্রলীগের সাবরুন জামিল সুষ্ময় নামের এই নেতা।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর, ছাত্রলীগ নেতাদের বাস না দেওয়া প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে ছাত্রলীগ নেতারা। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক এ এফ এম আলী হায়দারকে লাঞ্চনার অভিযোগ অভিযোগও ছাত্রলীগ নেতা সাবরুন জামিল সুষ্ময়ের বিরুদ্ধে।

তবে এসব ঘটনার বিষয়ে অবস্থান জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সাবরুন জামিল সুষ্ময় মারধরসহ প্রত্যেকটি অস্বীকার করেছেন।

তবে সুষ্ময়ের কর্মকণ্ডের সম্পর্কে বিশ্ববিদালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাজী লিংকন বলেন, কম্পাসে ঘটে যাওয়া একাধিক ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সুষ্ময়ের নাম জড়িত রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককের উপর হামলার ঘটনাটি লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু দাবি করেন, বাস চালককে মারধরসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে সুষ্ময় জড়িত না। এ ছাড়া কোন কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া তার অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কেন্দ্র দ্বারা পরিচালিত। এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে শাস্তি দিতে হবে। তাকে আমরা মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি। এর পরে এ ধরনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত হলে আমি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।

সুষ্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘সুষ্ময়ের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এসেছিল। আমরা সেগুলো তদন্ত করেছি। দুই-এক দিন আগে সাংবাদিক মারধরের বিষয়েও একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সার্বিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে কয়েকদিন আগে সিনেমা দেখাকে কেন্দ্র বাম জোটের সঙ্গে একটা ঝামেলার কথা শুনেছিলাম। অভিযোগ সত্য হলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence