কৃষক দল নেতার বিরুদ্ধে কবরস্থান দখলের অভিযোগ, মারামারিতে আহত ৩

আহতরা হাসপাতালে
আহতরা হাসপাতালে  © টিডিসি ফটো

নেত্রকোণার বারহাট্টায় কবরস্থান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এর জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় স্থানীয় উপজেলা কৃষক দলের সভাপতির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে বারহাট্টা উপজেলার গুমুরিয়া গ্রামে। আহত ব্যক্তিরা হলেন—গ্রামের আজিম মিয়া (৩০), সালমা আক্তার ওরফে লংজান (৫০) এবং তারাজান আক্তার (৪০)। আহত তিনজনই বর্তমানে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কবরস্থানের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল গুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হালান মিয়া ও বারহাট্টা উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি বাবুল মিয়ার মধ্যে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই জমির দখল নেন বাবুল মিয়া। এরপর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

সম্প্রতি একটি সেলাই মেশিন চুরি হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা নতুন করে বাড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হালান মিয়ার বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, হামলাকারীরা বাড়ির ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং নারীসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে।

হামলার শিকার হালান মিয়া বলেন, “গত বছর ৫ আগস্ট বাবুল মিয়া আমাদের পারিবারিক কবরস্থানের জমি দখলে নেন। কিছুদিন আগে আমাদের একটি সেলাই মেশিন চুরি হয়, সেটা উদ্ধারের চেষ্টা করতে গেলে তাদের সঙ্গে বিরোধ হয়। বিনা উসকানিতে তারা আমাদের বাড়িতে হামলা করে, তিনজনকে আহত করে।”

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাবুল মিয়া। তার দাবি, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। “আমার ভাতিজাদের সঙ্গে তাদের একটু মারামারি হয়েছে, তবে জমি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে,” বলেন তিনি।

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। উভয়পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গ্রামে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশি নজরদারি বাড়ানো না হলে নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ