আইসিইউতে আরাধ্য, লাইফ সাপোর্টে তাসনিয়া

  © সংগৃহীত

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবা ও দুই বোনকে হারানো কলেজছাত্রী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা নিজেও লাইফ সাপোর্টে আছেন। আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে দুর্ঘটনায় বাবা-মা হারানো শিশু আরাধ্য বিশ্বাসকে। এদিকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে দুর্জয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানান, আহত শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও সে এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়। তার দুই পা ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে সে ঝুঁকিতে আছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় আরাধ্য তার বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা রানীকে হারিয়েছে। এখন নিজে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

আরাধ্যর বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে।

এদিকে একই দুর্ঘটনায় আহত ঢাকা মিরপুরের বাসিন্দা কলেজছাত্রী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমার (১৮) অবস্থারও পরিবর্তন হয়নি। তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন। দুর্ঘটনায় প্রেমাও তার বাবা রফিকুল ইসলাম শামীম, মা লুৎফুন নাহার, দুই বোন এবং এক মামাতো বোনকে হারিয়েছেন।

এ ছাড়া মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত দুর্জয়কেও রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে। তার অবস্থাও সংকটাপন্ন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থা করারও ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন এবং উপপরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরীসহ কর্মকর্তা এবং চিকিৎসকরা।

গতকাল  দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ড ও আইসিইউতে যান ফারুক-ই-আজম। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রোগীদের খোঁজখবর নেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা যা পরামর্শ দেবেন, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও সেটার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

এ সময় চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আরাধ্য নামের শিশুটি তার বাবা-মাকে হারিয়েছে। খুবই কষ্টদায়ক। শিশুটির শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে গেলেও এখনো ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসকরাও তাদের সারিয়ে তুলতে আন্তরিকভাবে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

এর আগে গত বুধবার সকাল ৭টার দিকে লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়া চুনতি বন রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে মারা যান ১০ জন। এর মধ্যে একই পরিবারের ৫ সদস্য রফিকুল ইসলাম শামীম (৪৬) ও তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার সুমি (৩৫), তাদের দুই মেয়ে ৮ বছরের লিয়ানা এবং ১৪ বছরের আনিশা আক্তার, শামীমের ভাগনি তানিফা ইয়াসমিন (১৬) নিহত হন।

এ ছাড়া মাইক্রোবাসের যাত্রী দিলীপ বিশ্বাস (৪৩) ও তার স্ত্রী সাধনা রানী মণ্ডল (৩৭), আশীষ মণ্ডল (৬০), মুক্তার হোসেন ও চালক ইউসুফ আলী (৫৫) মারা যান।


সর্বশেষ সংবাদ