মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর

নিয়োগের প্রশ্ন হোয়াটসঅ্যাপে পান উপপরিচালক, শেয়ার করেন ফেসবুকে

পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ স্থগিতের খবরে বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা
পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ স্থগিতের খবরে বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা  © সংগৃহীত

মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষা শুরুর আগে হঠাৎ এ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, একজন উপপরিচালক পরীক্ষা শুরুর দিন সকালে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পেয়েছিলেন। পরে তিনি তা ‘ভুলবশত’ ফেসবুকে শেয়ার করলে প্রশ্নটি ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে অধিদপ্তরের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জড়িত থাকা ছিলেন। ঘটনার আগে ও পরের সিসি ক্যামেরা (ক্লোজ সার্কিট) ফুটেজ থেকে তাদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের এ নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন উপপরিচালক আবুল কাশেম। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল পরিকল্পনাকারী। আর তার কম্পিউটার অপারেটর মো. শাহজাদা পরীক্ষার আগে জেলায় জেলায় প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের বগুড়া জেলার উপপরিচাক মো. শহিদুল ইসলামকেও প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছেন শাহজাদা। অন্যদিকে শহিদুলও প্রশ্ন পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি এখন উল্টো প্রশ্ন তুলেছেন ‘শাহজাদা কেন তার কাছে প্রশ্ন পাঠিয়েছেন সেটি তিনি জানেন না’।

বগুড়ার উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার দিন সকালে আমার হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। প্রথমে মনে করেছি আমার মেয়ের প্রশ্ন। পরে পড়ে দেখি অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে জনবল নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। পাঠিয়েছে প্রধান কার্যালয় থেকে শাহজাদা। কারণ তার নম্বর আমার মোবাইল ফোনে আগে থেকেই সেভ করা ছিল।

আরও পড়ুন: সমালোচনার মুখে শিশুদের নাস্তা আবার চালুর সিদ্ধান্ত

তিনি বলেন, আমি প্রথমে স্ক্রিনশট নিতে গিয়ে ভুলবশত তা ফেসবুকে শেয়ার হয়ে যায়। ফেসবুকে শেয়ার হওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কারণ আমি মোবাইলের ব্যবহার ভালোভাবে জানি না। পরে আমাকে সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে ফোন করে ঢাকায় এনে লিখিত ও মৌখিক সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

জানা যায়, ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ৫০৪টি পদে জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি। ২৭ জন ডে-কেয়ার ইনচার্জ, ৬০ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক এবং ৪১৭ জন অফিস সহায়ক নিয়োগ দেওয়ার কথা।

এরপর ১৩ অক্টোবর রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ২০টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা প্রবেশ করার পর হঠাৎ জানানো হয় পরীক্ষা নেওয়া হবে না। কোনো কারণ উল্লেখ না করে এবং পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এমন ঘোষণায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মুহাম্মদ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেন, পরীক্ষাটি সম্ভবত পিএসসি এবং মন্ত্রণালয় নিতে পারে। আমি সবটুকু জানি না। তিনি সংস্থাটির পরিচালক মনোয়ারা ইশরাতের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। মনোয়ারা ইশরাত বলেন, যা ঘটেছে তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন সেহেতু এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলতে চাই না।


সর্বশেষ সংবাদ