সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল চায় আদিবাসীরা

  © টিডিসি ফটো

সকল আদিবাসীকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও তাদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ‘লড়াই সংগ্রামের তিন দশক’ শীর্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিষদের ৩ দশক পূর্তি উপলক্ষে আজ রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানী শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আদিবাসীরা সমবেত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম থেকে শোভাযাত্রা ও মিছিল নিয়ে শাহবাগ উপস্থিত হয় এবং সাড়ে তিনটায় সমাবেশ শুরু করে।

তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সকল আদিবাসীদেরকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে; সমতলে আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন ও মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে; সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের পাঁচ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল করতে হবে ও উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসী কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে; গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্মের তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার করতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনতিবিলম্বে যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সারা দেশে আদিবাসীদের উপড় সকল প্রকার অন্যায় অত্যাচার জুলুম বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য এই শাহবাগে দাঁড়িয়েছি। এই অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের অনেক ভাই প্রাণ দিয়েছেন। আমরা তাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দিবো না। আমরা ১৬৮ বছর ধরে সেই সিধু কানুর আমল থেকে লড়াই করছি আরও কত বছর লড়াই করতে হবে জানি না। কিন্তু এই আন্দোলনআমরা চালিয়ে যাবো। আময়াদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে যতদিন আন্দোলন করতে হয় আমরা করবো।

বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আদিবাসীদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিবেচনা করা যাবেনা। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম তীর ধনুক নিয়ে নামেন আদিবাসীরা। 

তিনি বলেন আদিবাসীদের ভোটের বাক্সে বন্দি করে ফেলা হয়েছে। কোনো একটা মার্কায় ভোট দিলেই তারা বাঁচে। আদিবাসীদের ভোট প্রতিবন্ধী বানিয়ে ফেলা হয়েছে। আদিবাসীরা তাদের সকল অধিকারের সাথে লড়াই করছে পরিবর্তে তারা পেয়েছে শুধু ভাওতা।

এসময় তিনি আওয়ামীলীগের সমালোচনা করে বলেন বাংলাদেশে যে ভোটের রাজনীতি হয় সে রাজনীতিতে আদিবাসীদের কোনো দাম নেই। তাদের জন্য বাজেট খুবই সীমিত তবুও তারা বলছে তারা আদিবাসী বান্ধব। কিছু না দিয়েও যদি আনুগত্য পাওয়া যায় তাহলে তো তারা কিছু দিবেই না।

পাবনা জেলা আদিবাসী পরিষদের সভাপতি আশিক বনিয়াস বলেন, আদিবাসীরা জান দেয় তো মান দেয় না। আমরা এক কথার মানুষ। বঙ্গবন্ধু কন্যা যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয় আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রয়োজনে আমরা গণভবন ঘেরাও করবো শেখ হাসিনাকে আমাদের দাবি শুনিয়ে ছাড়বো।

আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভাপতি নকুল বাহান বলেন, রাষ্ট্র আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে ডাকছে। আমরা আমাদের আদিবাসী পরিচয় চাই।

তিনি বলেন, আদিবাসীরা আজ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারকে তাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আদিবাসীরা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করে তাদের রেজাল্ট কম য়থাকার জন্য তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয় না। সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।

চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অনিক মিয়েন বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও দেখতে রাজশাহীতে ২ জন কৃষক পানির অভাবে বিষ আত্মহত্যা করছে কিন্তু বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান কেউ শোক প্রকাশ পর্যন্ত করেননি। এমন একটা রাষ্ট্রে বসবাস করছি যেখানে রাষ্ট্র কযাদের হাতে তারা চোখ থাকিতেও অন্ধ।

এসময় তিনি বলেন, চারদিকে শুধু উন্নয়নের গল্প শুনি। ঘুম থেকে উঠে উন্নয়ন, ঘুমাতে যাওয়ার আগে উন্নয়ন দেখি।  আমাদের ভাতে মারার উন্নয়ন আমরা চাইনা আমরা পৃথক ভূমি কমিশন চাই, আমরা আমাদের স্বীকৃতি চাই, 

এছাড়াও সমাবেশে আদিবাসীদের উপর ধর্ষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, বৈষম্য, বর্ণবাদের অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন আদিবাসী পরিষদের বিভিন্ন জেলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। 

উল্লেখ্য, সমাবেশে বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence