ঢাবিতে ৪ বছরের সম্মান কোর্সের তিন দশক
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১১ PM , আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ PM
আগামী ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করার মাধ্যমে তিন দশক পূর্ণ হবে ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) কোর্সের। ১৯৯৩-৯৪ সেশন থেকে শতবর্ষী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে তিন বছরের সম্মানের পরিবর্তে চার বছরের সম্মান কোর্স (Four-year honours) চালু হয়েছিল। ১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শুরু পর থেকে তিন বছরের সম্মান কোর্স এবং এক বছরের মাস্টার্স কোর্স চালু ছিল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসির দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
২০০৯ সালে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহামিলন উপলক্ষ্যে বের হওয়া ‘সৌরভে গৌরবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামক প্রকাশনায় অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ লিখেছিলেন, তখন এটাই ছিল এক বিপ্লবাত্মক পদক্ষেপ। তবে এই প্রক্রিয়া চালু এত সহজ ছিল না। ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসির দায়িত্বে ছিলেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্মৃতিচারণ করে ওই প্রকাশনায় অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ লিখেছিলেন, “১৯৯৬ সালের জুলাই-এ নতুন শিক্ষাসূচি সফল হবার মুখে। বাকি মাত্র একটি একাডেমিক সেশন। যার একটি সেশনের কথা বলছি এজন্যে যে, ১৯৯৩-৯৪ সেশন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমে নতুন আর একটি অধ্যায়ের সূচনা হয়। জন্মক্ষণ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় তিন বছরের সম্মান কোর্স এবং এক বছরের মাস্টার্স। তখন এটাই ছিল এক বিপ্লবাত্মক পদক্ষেপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি সর্বত্র শ্রদ্ধার সাথে স্বীকৃত হয়েছিল। স্বীকৃতি লাভ করেছিল বিশ্বের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে।”
বইয়ের প্রচ্ছদ ও ড. এমাজউদ্দীন আহমদ
তিনি লিখেছেন, “গত শতকের আশির দশক থেকে এক্ষেত্রে দেখা দিয়েছিল হাজারও প্রশ্ন। তিন বছরের সম্মান এবং এক বছরের মাস্টার্স এই ডিগ্রি উন্নত দেশের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ে আর স্বীকৃতি পাচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও এম পড়তে হতো। এমন কী প্রতিবেশী ভারতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে তিন বছরের সম্মানের পরিবর্তে চার বছরের সম্মান কোর্স (Four-year honours) চালু হয়।”
“এই প্রক্রিয়া চালু করাও খুব সহজ ছিল না। বিভিন্ন পর্যায়ে সিনিয়র শিক্ষকদের সহযোগিতার ফলে তা সম্ভব হয়। ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিজনেস স্টাডিজের প্রফেসর খন্দকার বজলুল হক, আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর এরশাদুল বারীর ভূমিকা এক্ষেত্রে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আরও লিখেছিলেন, “এই সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে কম্পিউটার বিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি এবং সঙ্গীতের মতো পাঁচটি নতুন বিভাগ, যাতে ছাত্রছাত্রীদের একাডেমি ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়।”
“তাছাড়া, ফার্মেসি বিভাগকে একটি অনুষদে রূপান্তরিত করা হয় যেন এর বিভিন্নমুখী ক্ষেত্রগুলো গভীর অনুশীলনের আওতায় আসে। এই সময়কালে বিভিন্ন বিভাগের মাস্টার্সের প্রিলিমিনারি অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে স্নাতক সম্মানের আওতায় আনা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমকে। এই লক্ষ্যে চারুকলা, শিক্ষা ও গবেষণা এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুনভাবে চালু করা হয় স্নাতক সম্মানের কর্মসূচি।”