ভাতের বিকল্প হতে পারে আলু: বাকৃবি উপাচার্য

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বাকৃবি উপাচার্য
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বাকৃবি উপাচার্য  © টিডিসি ফটো

চালের উপর নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, চাল নির্ভর খাদ্যে বেশ কিছু রোগব্যাধি আক্রমণ করে যার মধ্যে ডায়াবেটিস প্রধান। এই ভাতের বিকল্প হতে পারে আলু।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট বিল্ডিং বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাকৃবি উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ চাল নির্ভর অর্থনীতি এবং এই চালের দামের তারতম্যের কারণে আমাদের বাজার ও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। তবে আমাদেরকে এই চাল নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষিতদের শতকরা ৮০ জন ভাত খেতে চাচ্ছেন না।

‘রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফ বায়ো ফর্টিফাইড সুইট পটেটো ফর বাংলাদেশ এন্ড সাউথ এশিয়া’ গবেষণা প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মিষ্টি আলু উত্তোলন এবং মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য। এ প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টার (সিআইপি)।

ফসল ও খাদ্যের বৈচিত্র্যতা জমির উর্বরতা ও সুস্বাস্থ্য গঠন করতে সাহায্য করে বলে জানান বাকৃবি উপাচার্য। তিনি বলেন, বারির অনেক আলুর তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে, যার ফলন ১০-১২ টন প্রতি হেক্টরে। তবে এই মিষ্টি আলু তার প্রায় তিনগুণ। এমন আরো অনেক অনেক গবেষণা আছে যা দেশ ও দশের সামগ্রিক উপকারে আসবে।

তিনি বলেন, এসব গবেষণা কৃষকরা জানতে পারলে তাদের নিকট অবশ্যই সমাদৃত হবে। সুস্থ ও সমৃদ্ধ জাতি গড়তে আমাদেরকে অবশ্যই ভাতের বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মাঠ থেকে বাউ মিষ্টি আলু-৫ এবং গবেষণাধীন কৌলিক সারি থেকে আলু তোলা হয়। এক শতক পরিমাণ মাঠে বাউ মিষ্টি আলু-৫ তোলে ওজন করে দেখা যায় প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ টন মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। একটি মিষ্টি আলু ওজন করে সর্বোচ্চ ১.২ কেজি পাওয়া যায়।

কৌলিক সারির আলুতে প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৫-৩০ টন আলু পাওয়া যায়। তবে এগুলোতে এন্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ। পরবর্তীতে গবেষণায় ব্যবহৃত মিষ্টি আলুর গুণাগুণসহ তা চাষাবাদের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। 

প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট বিল্ডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম আরিফ হাসান খান রবিন এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

মিষ্টি আলু চাষি জোবেদ আলী বলেন, এই মিষ্টি আলুর ফলন অনেক ভালো। ১২০ দিনের মধ্যেই আলু ঘরে তোলা যায়। এই মিষ্টি আলু চাষে কৃষক আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হতে পারবে। আমরা অল্প জমিতে এবার চাষ করেছি তবে পরবর্তীতে এই আলু আরো বড় পর্যায়ে চাষ করার ইচ্ছা আছে।


সর্বশেষ সংবাদ