একদিনের বিরতিতে ফের উত্তাল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রবিবার সকাল থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রবিবার সকাল থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  © টিডিসি ফটো

আবাসিক হলের দশ তলা থেকে লাফ দিয়ে মারা যাওয়া শিক্ষার্থী মারিয়া রহমানের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। একদিনের বিরতিতে আজ রবিবার (০২ এপ্রিল) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন।

এর আগে গত ২৩ মার্চ ১০ তলা বিশিষ্ট কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের ছাদ থেকে ওই ছাত্রী লাফ দেন। এতে মারাত্নক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি। ৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়  গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

পরে শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে তাদের দাবি জানায়। এ সময় তারা প্রশাসনকে মারিয়া মৃত্যুর জন্য দায়ী ও ধিক্কার জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

এরপর শনিবার একদিনের বিরতি দিয়ে আজ রবিবার ফের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো- মারিয়া রহমানের আত্মহত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে; মারিয়ার পরিবারের সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ স্বরূপ প্রশাসনকে এককালীন অর্থ প্রদান করতে হবে।

আরও পড়ুন: ক্লাসে পড়াতে পারেন না বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, নালিশ শিক্ষার্থীদের

সেশনজট এবং রি-এড দূরীকরণে ক্যারিসন ব্যবস্থা চালু করতে হবে; সিটি কুইজ পরীক্ষা কমিয়ে এক সিটি ও এক ফাইনালের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় এক্সাম উইক চলমান রাখতে হবে। (সকল ক্লাস বন্ধ থাকবে); ব্যবহারিক ক্লাসে যা পড়ানো হবে, শিক্ষার্থীরা তা নোট করবে এবং ব্যবহারিক থাতা হিসেবে পরীক্ষায় তা-ই জমা দেবে।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্লাসে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নিয়ম শিথিল করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে সুস্পষ্ট আচরণবিধি ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং এর জন্য ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সকাল থেকে এ আন্দোলন শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববদ্যিালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলেননি। এছাড়া আন্দোলনস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনেও কর্তৃপক্ষের কাউকে আসতে দেখা যায়নি। এখানের কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বরাবর দেওয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মারিয়া রহমান একাডেমিক বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে গত ২৪ মার্চ আবাসিক হলের ১০তলা থেকে লাফিয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এক সপ্তাহ পর গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মারিয়া। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতে মানসিক সমস্যার কারণে মারিয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শর্ট টেম্পারসহ মারিয়ার বেশ কিছু মানসিক সমস্যার বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে বলেও দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ